নাটোরের লালপুর থেকে বেতার শিল্পী ও দরিদ্র ভ্যানচালক রেজাউল করিমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় লালপুর উপজেলার কৃষ্ণরামপুর গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার গাওয়া গান ভাইরাল হয়েছিল। তাকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, রেজাউল করিম আত্মহত্যা করেছেন। তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রেজাউল করিমের কণ্ঠে ছিল সুরের মূর্ছনা। কিন্তু অভাবের কারণে তিনি বেশিদূর এগোতে পারেননি। তিনি রিকশা ও ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যন্ত্রশিল্পী হিসেব কাজ করতেন।
শুক্রবার রেজাউল করিম লালপুর উপজেলার কৃষ্ণরামপুর গ্রামের নিখিল সরকারের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে বাদ্যশিল্পী হিসেবে যান।
নিখিল সরকারের ভাইয়ের ছেলে মিঠুন সরকার বলেন, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রেজাউল বলেন, তার শরীর খারাপ করছে। তিনি একটু ঘুমাবেন। পরে গান করার সময় তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিকেল তিনটার দিকে তাদের বাড়ির পাশের আমবাগানের একটি গাছে তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে শনিবার রাতে পুলিশ রেজাউল করিমের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।
স্থানীয় লোকজন জানান, রেজাউল করিমের বাবা একজন যাত্রা শিল্পী ছিলেন। বাবার সঙ্গে শিশু বয়সে তিনি অভিনয় করেছেন। তবে বাবার মৃত্যুর পর যাত্রার দুর্দিন নেমে এলে তিনি যাত্রা ছেড়ে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে রিকশা ও ভ্যান চালাতে শুরু করেন। কিন্তু সঙ্গীতকে ছাড়েননি তিনি। যেখানে অনুষ্ঠান হতো সেখানেই ছুটে যেতেন তিনি। নিজের খেয়ালেই গান করতেন। শিল্পী হিসেবে তার এলাকায় যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তিনি রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন। বর্তমানে রেজাউল করিমের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে।