ভর্তির লোভ দেখিয়ে- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের অপেক্ষমান তালিকা থেকে উপাচার্য কোটায় (মুক্তিযোদ্ধা) জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেছেন মোফসেনা ত্বাকিয়া নামে এক ছাত্রী।
অভিযোগকারী ওই ছাত্রী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সি ইউনিটে (কলা ও মানবিক অনুষদ) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অপেক্ষমান ছিলেন।
ভর্তি না হয়েও পরবর্তীতে ওই ছাত্রী জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ৪৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বছর ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারী ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগপত্রে বলেন, ‘আমাকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে অপেক্ষমান তালিকা থেকে উপাচার্য কোটায় (মুক্তিযোদ্ধা) ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় মো. আল-আমিন হোসেন।
এজন্য সে বিকাশের মাধ্যমে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নেয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়। এ সময়ে তার সঙ্গে আমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও থাকায়, সে আমাকে ভর্তি জালিয়াতির ব্যাপারে কারও কাছে অভিযোগ না করার জন্য বলে। যদি আমি বলি তবে সে ওই ছবি ও ভিডিওগুলো ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দেয়।’
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকালে আল-আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে একাধিকার ডাকা হলেও তিনি বিষয়টি বারবার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
পরে সন্ধ্যায় প্রক্টর অফিসে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জালিয়াতি প্রক্রিয়ায় ভর্তি চেষ্টার অভিযোগের প্রমাণ মিলে। অভিযুক্ত মো. আল-আমিন (শাহেদ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ ৪২ ব্যাচের ছাত্র এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
পরেরদিন, বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন বোর্ডের মিটিংয়ের পর রাত ৯টার দিকে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে অপেক্ষমান তালিকায় থাকা শিক্ষার্থী মোফসেনা ত্বাকিয়ার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভর্তি চেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে শিক্ষার্থী মো. আল-আমিন হোসেন শাহেদকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে উপাচার্য কোটায় (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনি) সর্বমোট ২০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হয়।