পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কুড়িয়ানার পেয়ারার খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। এখন চলছে পেয়ারা সংগ্রহের মৌসুম। আর তাই পেয়ারার পাইকারি বাজারগুলো এখন ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত। উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের প্রায় ডজনখানেক পাইকারি ভাসমান বাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে বাণিজ্যিক এ কার্যক্রম।
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানাসহ বিভিন্ন ভাসমান বাজারে প্রতিবছর নৌকায় করে পেয়ারা বিক্রি করেন চাষিরা। প্রায় দুইশ বছরের বেশি সময় ধরে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উৎপাদিত হচ্ছে স্থানীয় জাতের পেয়ারা। ভারতের গোয়া থেকে নিয়ে আসা পেয়ারার বিভিন্ন জাতের চাষাবাদ সময়ের বিবর্তনে উপজেলার জলাবাড়ী ইউনিয়নের কিছু অংশ এবং পার্শ্ববর্তী ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ও নবগ্রাম ইউনিয়নেও ছড়িয়েছে।
পেয়ারার রাজধানী খ্যাত এ এলাকাগুলো অত্যন্ত নিচু হওয়ায় সর্জান পদ্ধতিতে জমি উঁচু করে পেয়ারার চাষ করা হয়। একবার রোপনের পর একটি গাছ থেকে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পেয়ারা পাওয়া যায়।
প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে ফুল আসার পর জুন মাস থেকেই পেয়ারা সংগ্রহ করতে পারেন চাষিরা, যা পরবর্তী দুই মাস চলে পুরোদমে। তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পেয়ারা পরিপক্ক হতে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। আর এতে করে প্রায় একমাস পিছিয়েছে পেয়ারার মৌসুম।
আগে ট্রলার ও লঞ্চযোগে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেয়ারা পরিবহনে দীর্ঘ সময় ব্যয় হওয়ার পাশাপাশি সমস্যা হলেও এ বছর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সরাসরি ট্রাকযোগেই অল্প সময়ে দ্রুত পচনশীল এ ফল পরিবহন সম্ভব হচ্ছে। এতে খুশি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শিকদার জনান, এ বছর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পেয়ারা চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। অন্যান্য বছরের মতো এ বছর গাছে পেয়ারা পঁচে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বর্তমানে নেছারাবাদ উপজেলায় ৬০৭ হেক্টর জমিতে পেয়ারা বাগান রয়েছে। এ বছর প্রতি হেক্টরে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ টন। পদ্মা সেতুর কারণে সরাসরি ঢাকায় পেয়ারা যাওয়ায় এবার দাম বেশি পাচ্ছেন। এ বছর ১৫ থেকে ২০ দিন দেরিতে ফলন ধরায় পেয়ারার ভরা মৌসুম এখন চলছে।