চিন্তার জগতকে শানিত করে তোলে লেখনী। কুপমুণ্ডকতা থেকে বের হয়ে নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন তরুণ সমাজকে। বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত কিংবদন্তি। সবার কাছে সমাদিত- শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্র। তিনি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির সভাপতি। দেশ সেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক।
তিনি একাধারে লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ সংস্কৃতিসাধক, মুক্তিসংগ্রামী, মানবাধিকার সংগঠক, সর্বোপরি জাতির বিবেক। জীবনের ৮১ বসন্ত পেরিয়ে ৮২-তে পা রেখেছেন ১৮ ফেব্রুয়ারি।
শনিবার জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে উদযাপিত হয়েছে তার ৮১তম জন্মদিন। যৌথ আয়োজক- বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- স্ত্রী সিদ্দিকা জামান, আয়োজক দুই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম ও মো. আরিফ হোসেন।
এদিন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন- কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, শিল্পি হাশেম খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, মুনায়েম খান প্রমুখ।
বিকেল সোয়া ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত পরিবেশ করেন- সংগীত শিল্পী আঁখি হালদার ও উর্বী সোম। এছাড়া ফুল ও বই দিয়ে আনিসুজ্জামানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা, বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ভক্তরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, আনিসুজ্জামান বাংলা সাহিত্যের বাতিঘর। তিনি শুধু বাতিঘরই নয়, জাতির বিবেকও। আমার কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে তিনি জাতির বিবেক।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান স্যার সরাসরি আমার শিক্ষক ছিলেন না। কিন্তু তার লেখনী ও সাহিত্যের দ্বারা আমি যা জেনেছি তা শিক্ষকের চেয়ে ঢের বেশি। জাতির ক্রান্তিকালে তিনি এ জাতিকে পথ দেখিয়েছেন।
ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর ফাঁকে ফাঁকে বক্তব্য দিয়েছেন অনেকে। সবার বক্তব্যে ওঠে আসে আনিসুজ্জামানের দীর্ঘ কর্মজীবনের সফলতাগুলো। দাবি উঠেছে- সরকার যেন জীবনের ছায়াহ্নে অবস্থান করা এ গুণী শিক্ষককে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
বক্তারা বলেন, আমরা আশা করব সরকার যেন আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তারা বলেন, আনিসুজ্জামান এ সময়ের বাতিঘর। তরুণ প্রজন্মের জন্য তিনি এক প্রেরণার নাম। ভাষা আন্দোলনে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ব্যাপক অবদান ছিল। কিন্তু সে অবদানের কথা সেভাবে উঠে আসছে না। তিনি নিজেও সেটিকে স্ব-উদ্যোগী হয়ে প্রকাশ করছেন না। এটা তুলে ধরা উচিত।