বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (২০ আগস্ট) ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ নিয়ে বাসভবন ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে বরিশালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাড়িতে হামলা-পরবর্তী ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) নগরীতে কিছুটা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও আজ পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে।
স্বাভাবিক অন্যদিনের মতো সকাল থেকে রাস্তাঘাটে লোকজন চলাচল করছে। যানবাহন চলাচলও রয়েছে স্বাভাবিক। দোকান-পাট খুলেছে। তবে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর রয়েছে পুলিশ।
নগরীর সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি নগরীর রাস্তায় রাস্তায় র্যাব ও পুলিশকে টহলও দিতে দেখা গেছে। কোথাও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর বিভিন্নস্থান থেকে তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
তারা হলেন-নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন হাওলাদার ও সদর উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কবির তালুকদার ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম জানান, ইউএনওর বাসভবন ও পুলিশের ওপর হামলার দুই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৮ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নগরীতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয় বৃহস্পতিবার।
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে জেলা প্রশাসন। এখন সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বেশ ভালো। উদ্বেগের কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, তারপরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। তবে যদি প্রয়োজন হয় বিজিবি চাওয়া হবে। বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসায় কয়েক দফা হামলা চালানো হয়।
হামলাকারীদের রুখতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনসার সদস্যরা রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়েন। প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাত থেকে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ অচল করে দেয়া হয়।
হামলার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়। দুটিতেই বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।