চার বছর আগে ব্রাজিলজুড়ে হাহাকার উঠেছিল নেইমারের জন্য। সেমিফাইনালের আগে নেইমার ইনজুরিতে পড়ায় স্বাগতিক দর্শকদের সেই হাহাকার এখনো চোখে ভাসে। সাও পাওলোর নিজের বাসায় বিছানায় শুয়ে তিনি দেখেছেন জার্মানির কাছে নিজেদের লজ্জাজনক হার। রাশিয়া বিশ্বকাপে পিএসজি সুপার স্টারকে নিয়ে তেমন শঙ্কা নেই। তবে ব্রাজিলের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সেন্ট পিটার্সবার্গে দর্শকদের মধ্যে আলোচনাটা নেইমারকে নিয়েই বেশি।
১৭ জুন রোস্তভ এরেনায় সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে নেইমার মাঠে নেমেছিলেন ইনজুরি কাটিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত না হয়েই। ফেব্রুয়ারিতে চোটে পড়ার পর ওটাই ছিল নেইমারের প্রথম প্রতিযোগতামূলক ম্যাচ। দলকে জেতাতে পারেননি। মাঠে নেইমার নিজেকে সেভাবে প্রমাণও করতে পারেননি। মুভমেন্টে মনে হয়েছে সমস্যা নিয়েই মাঠে নেমেছেন।
বিশ্বকাপের শুরুতেই ধাক্কা সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও পয়েন্ট হারিয়ে। গ্রুপের অন্য দল সার্বিয়া ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষে প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকাকে ১-০ গোলে হারিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচটি তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জন্য। শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গে ব্রাজিলকে জিততে হবে কোস্টারিকার বিরুদ্ধে। পয়েন্ট হারালে নেইমারদের পড়তে হবে সঙ্কটে।
মিডিয়া সেন্টার, প্রেসবক্স এবং সেন্ট পিটার্সবার্গের বিভিন্ন স্থানে যেখানে ফুটবলপ্রেমীদের জটলা, সেখানে আলোচনায় আসছেন নেইমার। বুধবার শহরের ফিফা ফ্যানফেস্টে কয়েকজন ব্রাজিলিয়ান সমর্থক নেইমারের ইনজুরি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। পিটারহফে দেখা হওয়া এক বাংলাদেশির প্রশ্নও ছিল-‘নেইমার কি খেলবেন? আমি যে এই একটি ম্যাচ দেখতেই রাশিয়া এসেছি!’
এই বিশ্বকাপে বড় তারকাদের অন্যতম ব্রাজিলের নেইমার, আর্জেন্টিনার মেসি, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং মিসরের মোহামেদ সালাহ। দুই ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পথে সালাহর মিসর। মেসির আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচ ড্র করেছে। মেসি পেনাল্টি মিস করায় এখন ঘরে ও বিদেশে সমর্থকদের সমালোচনার মুখে বার্সেলোনার এ সুপারস্টার।
একমাত্র রোনালদোই খেলছেন রোনালদোর মতো। প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক, দ্বিতীয় ম্যাচে ১ গোল। পর্তুগালের দুই জয়ের নায়ক এখন গোলদাতাদেরও শীর্ষে। নেইমারের দিকে এখন তাকিয়ে তার অগণিত ভক্তরা।
সোচিতে অনুশীলনের পর নেইমার নিজের উন্নতির কথা জানিয়েছেন। ভক্তদের জন্য এটা দারুণ খবর। আর ব্রাজিলের জন্য স্বস্তির। সেন্ট পিটার্সবার্গের দর্শকরা তো আশা করেই আছে, নেইমারের পা পড়বে তাদের মাঠে। নেইমারের যাদুময়ী ফুটবল দেখবেন গ্যালারিতে বসে।