এক বছরের অভিযানের পরও মাদকের মূল হোতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে এবার গডফাদারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রভাবশালী কাউকেই ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাহিনীর ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের ছোবল। বিশেষ করে ইয়াবা দেশের সীমান্ত এলাকা ছাড়িয়ে শহর, উপজেলা এমনকি গ্রামেও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ংকর এই নেশা যুব সমাজকে ধ্বংস করার পাশাপাশি কেড়ে নিচ্ছে অনেকের জীবনও। এমন অবস্থায় সরকারের ঘোষণা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষনার পর মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার ঘোষনা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একের পর এক অভিযানে আটক হতে থাকে মাদকের বড় বড় চালান। বিভিন্ন বাহিনীর সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয় আড়াইশোরও বেশি মাদক ব্যাবসায়ী।
তবে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরর কারণে এই অভিযান কিছুটা ভাটা পড়ে। এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা আবারো মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে। তাই আবারও নতুন করে মাঠে নামছে বিভিন্ন বাহিনী।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সোহেল রানা অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচনের পরে পুনরায় পুরোদমে মাদক বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। মাদকের ব্যবসা বা মাদকের সাথে যেই সম্পৃক্ত থাকুক, তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অভিযান শুরুর পর বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের শীর্ষ মাদক কারবারিদের একটি তালিকা তৈরি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। যাদের কয়েকজন কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আর জামিনে আছে অনেকেই। কেউ কেউ আবার প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তি হওয়ায় থেকে যাচ্ছেন অধরা।
র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘গডফাদারা লিষ্টেড বা আনলিষ্টেড হোক; বিষয় আসলে সেটা নয়, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে , আমাদের গোয়েন্দা তথ্য আছে এবং আইনের আওতায় আনার জন্য যে সকল তথ্য প্রমাণ প্রয়োজন, সে গুলো মিললেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এখানে ছাড় দেবার কোন অবকাশ নেই।’
তবে, এবার মাদকের অর্থদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। সেইসাথে ইয়াবা বহণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হয়েছে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মাদকে অর্থলগ্নীকারী বা যারা পরোক্ষভাবে এ ব্যবসায় জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা কঠিন ছিল। কিন্তু নতুন আইনের ফলে অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের হাতে সোপর্দ করা সম্ভব।’
অব্যাহত এই অভিযানের মধ্যে চট্টগ্রামে বেশ কিছু চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি এরই মধ্যে আত্মসর্মপ করেছে। ইচ্ছে প্রকাশ করেছে আরো কয়েকজন।