রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল) সামনে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে শনিবার (১২ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।
ঝালকাঠি
সকাল ১১টায় ঝালকাঠি শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাব সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন রাইয়ান বিন কামাল, ইয়াসিন ফেরসৌদস ইফতি, শাহরিয়ার দিপু, লিমা, স্বর্না প্রমুখ।
তারা বলেন, এটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, রাষ্ট্র ও মানবতার ওপর একটি আঘাত। দিনের আলোয় যেভাবে পাথর দিয়ে একজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়।
যশোর
যশোর প্রেস ক্লাবের সামনে সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে প্রতিবাদী মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রতিবাদী স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে প্রেস ক্লাব চত্বর।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, এসব ঘটনার পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক প্রভাবই মূল কারণ। দোষীরা বিচার ও শাস্তির বাইরে থেকে যাওয়ায় অপরাধের হার বেড়েই চলেছে। ফলে, সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা।
নওগাঁ
সকাল সাড়ে ১১টায় নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে ‘নওগাঁ সংগ্রামী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার মুক্তির মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা তানজিম বিন বারীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র নেতা আরমান হোসেন, সাদনান সাকিব, গণঅধিকার পরিষদের সাকিব হোসেন, এনসিপির নওগাঁ জেলার সমন্বয় কমিটির সদস্য দেওয়ান মাহবুব আল হাসান সোহাগ প্রমুখ।
তারা বলেন, চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এটি নিছক হত্যাকাণ্ড নয়, চরম বর্বরতা। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এমন নৃশংসতা চলতেই থাকবে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।
টাঙ্গাইল
বিকেল ৫টায় জেলা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ টাঙ্গাইল শহরের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিরালা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে নিরালা মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ শেরশাহ, ছাত্র নেতা আলিফ ইসলাম, ফারদিন আহমেদ স্মরণ ও সুমাইয়া আক্তার ইতি, শিক্ষক আমিনুল হক, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মেহেদী হাসান রিফাত প্রমুখ। এ সময় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাঙামাটি
বিকেলে রাঙামাটি শহরের বনরূপা জামে মসজিদের সামনে মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘খুন, চাঁদাবাজি আর নয়’, ‘সকল হত্যার বিচার চাই’, ‘বর্বরতার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা নুরুল আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা মো. ইমাম হোছাইন ইমু, কৃষি ইনস্টিটিউটের ছাত্রনেতা মো. জালাল উদ্দীন, রেড জুলাইয়ের সহ-মুখপাত্র সাদিয়া ইসলাম সায়েদা, এনসিপি রাঙামাটির যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ওয়াহিদুজ্জামান রোমান প্রমুখ।
ঠাকুরগাঁও
দুপুরে ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠ থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন—জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবু হানিফ মুক্তা, যুবদলের সদস্য সচিব মো. জাহিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মাসুদুল ইসলাম মুন্না, সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান কামু,যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস, সদস্য সচিব মো. বাবু ইসলাম,সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুমন ইসলাম। এছাড়াও ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্যান্য নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।