বোর্ড চেয়ারম্যানের খামখেয়ালীপনায় হুমকির মুখে ১৮ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago
????????????????????????????????????

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উত্তরপত্র পুন:নিরীক্ষণ নীতিমালা না মানায় এইচএসসি ফলাফল প্রার্থী ১৮ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন পড়েছে হুমকির মুখে। গত ১৭ জুলাই এইচএসসি’র ফলাফল প্রকাশিত হলেও বরিশাল বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ১৮ শিক্ষার্থীর ফলাফল এখনও অপ্রকাশিত রয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে শিক্ষার্থীরা ফলাফল প্রকাশের ব্যাপারে যোগাযোগ করলেও মেলেনি কোন সুরাহা।

এ ব্যাপারে বোর্ড কতৃপক্ষ জানিয়েছে, উচ্চতর গণিত ১ম পত্রের প্রশ্নের উত্তরপত্রের সাথে শিক্ষার্থীদের খাতার মিল থাকায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গৃহীত হবে। এদিকে উত্তরপত্রের সাথে খাতার মিল থাকায় ১৮ শিক্ষার্থীকে বোর্ড কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদও করেছে দফায় দফায়। এরমধ্যে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের একজন শিক্ষার্থী নুসরাতকে বোর্ড চেয়ারম্যান তার বিশেষ কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় মারধর করেছে।

এব্যাপারে ভুক্তভুগী শিক্ষার্থী নুসরাত জানায়, গত ৫ আগষ্ট বোর্ড কতৃপক্ষ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাকেসহ ১৮ জন শিক্ষার্থীকে সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় বোর্ডে থাকার নির্দেশ দেন। আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বোর্ড চেয়ারম্যান ও প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাদের একটি বিশেষ কক্ষে নিয়ে জানতে চেয়েছে, সকল প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিলাম এবং পুর্ননাম্বার কিভাবে পেলাম?

এছাড়াও গোবিন্দ নামে এক বোর্ড কর্মচারীর সাথে আমার সখ্যতা রয়েছে তা স্বীকার করতে বলে এবং আমাকে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে আরো বলেন, আমার ফলাফল আজই প্রকাশিত হবে যদি আমি তাদের কথামতো কাজ করি। আর না করলে আমাকে বহি:স্কার করে দেয়া হবে। এরপর তারা আমাকে একটি সাদা কাগজ এনে বলে তুমি এখানে স্বাক্ষর করো।

আমি তা করতে না চাইলে আমাকে দুজনেই একাধিকবার থাপ্পর মারে। কাগজটিতে কি লেখা ছিলো জানতে চাইলে উক্ত শিক্ষার্থী প্রতিবেদকে বলেন, বোর্ডের ঐ কর্মচারী গোবিন্দর সাথে আমার সখ্যতা রয়েছে এবং সে আমাকে অবৈধভাবে উত্তরপত্র সরবরাহ করেছে তা লেখা ছিলো। পাশাপাশি এনিয়ে ভুক্তভুগী একাধিক শিক্ষার্থী আরো জানায়, বোর্ড চেয়ারম্যান ও প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমাদের সাথে বোর্ডের কোন কর্মচারীর গোপন যোগাযোগ রয়েছে তা স্বীকার করলে ফলাফল প্রকাশিত করবে। অপরদিকে উত্তরপত্র পুন:নিরীক্ষণ আইনানুযায়ী পরীক্ষক/প্রধান পরীক্ষক কতৃক প্রদত্ত নাম্বার কোন অবস্থাতেই সংশোধন/পরিবর্তন করা যাবেনা এবং ছোট-খাটো ভুল করলে তা সংশোধন করে দিতে পারবে কতৃপক্ষ। কিন্তু বোর্ড কতৃপক্ষের ভাষ্যমতে বোর্ডের তৈরীকৃত প্রশ্নের উত্তর পত্রের সাথে শিক্ষার্থীদের খাতার উত্তরপত্র কিভাবে হুবহু মিলে গেলো তা তদন্ত করে দেখছি। এছাড়াও ঔই ১৮ জন শিক্ষার্থীদের সাথে বোর্ডের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর অবৈধ যোগাযোগ রয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও আমাদের তদন্ত চলছে। অথচ একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকরা বলেন, অংকের বেলায় এটা অসম্ভব নয় কারণ অংকের নিয়মগুলো প্রায়ই সার্বজনীন এবং যিনি/যারা প্রশ্নোত্তর তৈরী করেন তারা প্রত্যেকেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়ান। শুধু তাই নয়, সেসকল শিক্ষকদের কোচিং বা প্রাইভেটের সীট শিক্ষার্থীদেরকেও দেয়া হয়। তাই প্রশ্নোত্তর মিলে যাওয়া অসমীচীন কি? এছাড়া শিক্ষাজীবনে অনেকেরই এমন রেকর্ড রয়েছে যারা গনিতে ১শ মার্কসের মধ্যে ৯৫/১শই পেয়েছে। কিন্তু বরিশাল বোর্ডের এহেন কর্মকান্ড শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে পড়ছে।

এনিয়ে ভুক্তভুগী মো: মাহবুব,আঃ ছালাম, নুরুল কবির, মির্জা রিমনসহ একাধিক অভিভাবক আজ বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, এইচএসসির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে আজ প্রায় ২৪দিন অতিবাহিত হচ্ছে কিন্তু আমরা অদ্যবধি কোন সুরাহা পাচ্ছিনা। আমাদের সন্তানদের মানষিকতায় চরম প্রভাব পরছে যা তাদের পরবর্তী উচ্চতর শিক্ষাজীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।

ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ্যও হয়ে পরেছে। বরিশাল বোর্ডের ১৮ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন থমকে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার ব্যাপারে বোর্ড কতৃপক্ষের কি করণীয় রয়েছে জানতে চেয়ে প্রধান পরীক্ষা নিযন্ত্রয়কের ০১৭১৫০৯০৪৫২ নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেনি।

এরপর একই ব্যাপারে বোর্ড চেয়ারম্যানকে কয়েক দফায় ফোন করা হলে তিনিও রিসিভ করেনি ।