প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের এ অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্য। বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সমুদ্রবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে আমি বন্দর কর্তৃপক্ষ, বন্দর ব্যবহারকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি বলেন, উন্নত দেশ হয়ে ওঠার পথে এ যাত্রাকে আরও গতিশীল করতে আমরা স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। ৪০ বিলিয়ন ডলারের এসব অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার পদ্মা সেতু নির্মাণ, দুই দশমিক ৪ গিগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়িতে কয়লা চালিত বৃহদাকার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের আমদানির আয়তনও বেড়েছে বহুগুণে। আমদানিকৃত এসব পণ্য যথাযথ ব্যবস্থাপনায় গ্রহণ করা এবং সেগুলো যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। আওয়ামী লীগ সরকার এ বন্দরকে বিশ্বমানের গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। স্বয়ক্রিয় কন্টেইনার অপারেশন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সিটিএমএস এবং বন্দরে নিরাপদে জাহাজ যাতায়াত ও বহিঃনোঙর অবস্থানকালীন জাহাজসমূহকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার জন্য আধুনিক ভিটিএমআইএস চালু রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সামগ্রিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল হিসেবে কোভিড-১৯ এর মতো ভয়াবহ অতিমারির মধ্যেও যুগোপযোগী ডিজিটালাইজেশন এবং দক্ষ জনবলকে কাজে লাগিয়ে ২৪/৭ অপারেশনাল ছিল চট্টগ্রাম বন্দর। একই সঙ্গে বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ফলে এ বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহকে ব্যবহারের সুবিধা প্রদানের জন্য এটিকে আরও আধুনিক ও আকর্ষণীয় বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে আরও লাভবান হবে। ইতোমধ্যে ইউরোপের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি কন্টেইনার জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। এতে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি আশা করি, চট্টগ্রাম বন্দরের সামগ্রিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবেন। সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চট্টগ্রাম বন্দর আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সবশেষে ১৩৫তম চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।