রবার্তো ফিরমিনোর গল্পটা একটু অন্য রকম। আর দশটা ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকার মতো সংগ্রাম করে উঠতে হয়ছে তারও। কিন্তু তার সংগ্রামটা ঠিক ব্রাজিলের সঙ্গে যায় না। এশিয়ার অনেক খেলোয়াড়ই চুরি করে ক্রিকেট-ফুটবল খেলে তারকা হয়েছেন। কিন্তু ব্রাজিলে তো ফুটবল বলতেই পাগল। সন্তানদের ফুটবল খেলতে খুব একটা বাঁধা দেয়না পিতা-মাতা। কিন্তু ফিরমিনোকে দিয়েছেন। কারণ ডাকাতের উৎপাত।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ব্রাজিলের আলাগোয়াস প্রদেশের মাসেইও শহরে বেড়ে ওঠা ফিরমিনোর। কিন্তু ওই এলাকাতেই তখন ডাকাত সদস্যদের মধ্যে মারামারি হতো। চুরি, ছিনতাই তো প্রতিদানকার ঘটনা। বাধ্য হয়ে সন্তানদের আটকে রাখতো বাবা-মা। ফিরমিনোও পড়ে গেলেন সেই ঘেরাটোপে। বাড়ির বাইরে বের হওয়া মানা তার। ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ থাকতেন তিনি।
কিন্তু রক্ত তার ফুটবল ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। মাসেইয়ের রাস্তায় তার ফুটবল খেলা চায়ই চায়। আর খেলতে গেলে ভাঙতে হবে তালা। ফিরমিনো তালা ভাঙার বোকামি না করে বরং তালা খোলার বুদ্ধি ফাঁদলেন। বানিয়ে ফেললেন নকল চাবি। ফিরমিনো খুলে ফেললেন বাড়ির দরজা, খুলে ফেললে সৌভাগের দরজা। পেয়ে গেলেন ব্রাজিল দলে ঢোকার চাবি। এমনকি বিরাট এক সম্ভাবনার দরজা খুলে ফেললেন নকল চাবি দিয়ে।
ছোটবেলায় তাকে ঘরে আটকাতে ঘাম ঝরেছে তার বাবা-মায়েরও। আর এখন তাকে আটকাতে ঘাম ঝরে ডিফেন্ডারদের। শৈশবে ফিরমিনো বেশ নাম কামিয়েছিলেন। কিন্তু ব্রাজিলের হয়ে খেলার জন্য যে ধাপ তা মাড়ানো মোটেও সহজ ছিল না তার জন্য। তার ফুটবল প্রতিভা মাজা-ঘষা করতে দরকার ক্লাবে ভর্তি হওয়া। কিন্তু তার বাবা-মা সামর্থবান নন।
তবে তিনি থামেননি। টাকা ধার করে অনুশীলন করেছেন। তার শৈশবের ক্লাবের কোচ লুইজ বেশ মনে করতে পারেন সে সময়ের কথা। তিনি বলেন, 'ফিরমিনো যখন ক্লাবে আসল তার বাবার চাকরি ছিল না। বুট কেনার টাকার অভাবে খালি পায়ে অনুশীলন করেছে সে। ক্লাব যাতায়াতের ভার ছিল আমার। ওর প্রথম বুটগুলোও আমার কিনে দেওয়া। সে সময় ওর বয়সীরা মাদক পাচার এবং গাড়ি ছিনতাই করতো। কিন্তু আমি জানতাম ফিরমিনো কখনোই ওসব করবে না।'
কিন্তু লুইজ কেন ওসব করতে গেলেন? কারণ তিনি ফিরমিনোকে চিনতে ভুল করেননি। লুইজ বলে চলেন, 'মাঠে তাকে দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম, ওর জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। একদিন সে বিশ্ব ফুটবলের তারকা হবে তা নিশ্চিত ছিলাম আমি। ওর জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবরে আমি আনন্দে কেঁদেছি। আমি ওর জন্য গর্বিত।' ফিরমিনোকে নিয়ে ওই গর্ব করার অপেক্ষায় এখন সারা ব্রাজিলিয়ানরা।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com