বুঝতে হবে একটা লেগস্পিনার, একটা ম্যাচ উইনার: সুজন

লেখক:
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহ-আগ্রহ আছে অনেকেরই। দেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন, উত্তরন চান সবাই। কিন্তু মাঠে গিয়ে হাতে কলমে দেশের ক্রিকেটের অগ্রযাত্রার সৈনিক খুব কম।

দেশের ক্রিকেট নিয়ে ভাবেন, ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান, ক্রিকেটই শেষ কথা, ক্রিকেটার তৈরি, ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করা, তাদের ভালোমন্দ দেখাই জীবনে ব্রত; জাতীয় পর্যায়ে এমন নিবেদিতপ্রাণ ক্রিকেট সেবক হাতে গোনা। তাদেরই একজন খালেদ মাহমুদ সুজন।

তানজিদ তামিম, তাওহিদ হৃদয়, তানজিম সাকিব আর রিশাদ হোসেন; উদীয়মান ক্রিকেটার যারা আছেন, তারা সবাই একটা কথাই বলেন-সুজন (খালেদ মাহমুদ সুজন) স্যার আমার ওপরে ওঠার সিঁড়ি। আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন।

 

ক্লাব পর্যায়ে আবাহনীর কোচ হলেও খালেদ মাহমুদ সুজন প্রিমিয়ারের অপর ক্লাব শাইনপুকুরেরও প্রধান টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার। পাশাপাশি রাজশাহীতে ‘বাংলা ট্র্যাকের’ একাডেমির প্রধান কোচেরও দায়িত্ব পালন করেন সুজন।

দেশে লেগস্পিনারের আকাল। আজ শনিবার বিসিবিতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে সুজন বুঝিয়ে দেন, কেন বাংলাদেশে লেগিস্পনার কম, কী কারনে লেগস্পিনার উঠে আসছে না।

সুজন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ক্লাব পর্যায়ে কোনো দলই ঝুঁকি নিয়ে লেগি খেলাতে চায় না। লেগস্পিনারদের বলে রান উঠে বেশি। কোনো দলই তা মেনে নিতে পারে না। তাদের সেই মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে। সুজন সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একজন লেগস্পিনার, একজন ম্যাচ উইনার-এটা মনে রাখতে হবে।’

সুজনের ব্যাখ্যা, ‘ঢাকার প্রথম-দ্বিতীয় বিভাগে কেউ লেগস্পিনার খেলাতে চায় না। লেগস্পিনাররা একটা বাজে বল করে ছয় খায়, সেটা কেউ মানতে চায় না। আপনি যদি সেকেন্ড থার্ড ডিভিশন ফলো করেন, ওখানে স্পিনাররা দশ ওভারে ১৮ রান দেয়। ওখানে বাঁহাতি স্পিনারদের দাপট থাকে। ওখানে তারা লেগি খেলাতে চায় না। আমাদের ক্লাব অফিসিয়ালদের বুঝতে হবে, একটা লেগস্পিনার একটা ম্যাচ উইনার।’

রিশাদ হোসেনের উত্থানের ঘটনা তুলে ধরে সুজন বলেন, ‘আপনি যদি রিশাদকে দেখেন। ওকে তিন বছর আগে কেউ খেলাতে চাইতো না। গত বছর ও আমার সাথে আবাহনীতে ছিল। আবাহনী যেমন শক্তিশালী দল, সেখানে তার খেলা কঠিন। আমি ওকে শাইনপুকুরে পাঠিয়ে বলেছি- তুই শাইনপুকুরে খেল। ওই ক্লাবকে আমি একটা কথা বলেছি, সে যেন নিয়মিত খেলে। এই শর্তে ওকে ছাড়তে রাজি হয়েছি। ও কিন্তু ১০ ম্যাচে ২৩ উইকেট পেয়েছে।অনেক ম্যাচ জয়ের অবদান ছিল।’

‘লেগস্পিনার যে ম্যাচ উইনার, এটা আমরা অনেক সময় ভুলে যাই। আমি ক্লাব অফিসিয়ালদের বলব, আপনারা লেগস্পিনারদের সুযোগ দেন। ওরা হয়তো এক ম্যাচে খারাপ করবে, কিন্তু ওই লেগস্পিনার আপনার ম্যাচ উইনার হবে। এটা আমাদের বিসিবির যেমন দায়িত্ব তাদের ডেভেলপ করা, বিসিবি কিন্তু ক্লাব ক্রিকেট খেলে না, খেলে ক্লাবগুলো। লেগস্পিনার নিয়ে তাদের আগ্রহটা থাকতে হবে। সুযোগটা কিন্তু তাদেরই দিতে হবে। সুযোগ দিলে তাদের জন্য ফল বয়ে আনবে লেগস্পিনাররা।’

সুজনের শেষ কথা, ‘মাশাআল্লাহ, আমাদের এখন অনেক লেগস্পিনার উঠে আসছে, আমরা খুশি। নার্সিংয়ের অভাব ছিল, এজন্য লেগস্পিনার কোচ আমরা একজন নিয়েছিলাম ডেভেলপমেন্টে। আমি খুব খুশি যে মুশতাক ভাই (জাতীয় দলের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ) আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আমি মনে করি উনি যদি বেশি সময় ধরে আমাদের সঙ্গে থাকেন, তাহলে আমাদের বেশকিছু লেগস্পিনার উঠে আসবে।’