বিয়ের একমাসও পূর্ণ হয়নি আগুনে পুড়ে ছাই

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বিয়ের একমাসও পূর্ণ হয়নি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় দগ্ধ হয়ে পুড়ে ছাই হওয়া রাজুর।

মাত্র ২৬ দিন আগেই আফরুজা সুলতানা স্মৃতির (২৪) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। অবশেষে এই কয়েকদিনের ব্যবধানেই বিধবা হলেন স্মৃতি।

জানা যায়, রাজুরা তিন ভাই। রানা টেলিকম নামে তাদের দোকান ছিল।

সেখানে ফোন-ফ্যাক্সসহ মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ বিক্রি করত তারা। ছোট্ট ভাইকে নিয়ে বাবা মাসহ ঢাকাতেই চুড়িহাট্টার পাশের একটা ভবনে থাকত।

গত ২৮ জানুয়ারি ধুমধাম করে মেয়ে আফরুজা সুলতানা স্মৃতির (২৪) বিয়ে দেন বাবা মো. আবুল খায়ের। ভালোই চলছিল মেয়ের নতুন সংসার। কিন্তু বুধবার রাতের আচমকা আগুনে জামাতা মাহবুর রহমান রাজু ও তার ছোট ভাই মাসুদ রানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

রাজুর শ্বশুর আবুল খায়ের কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘এই ছিল কপালে! কত আয়োজন করে বন্ধু সাহেব উল্লাহর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মাস না যেতেই মা (মেয়ে) আমার বিধবা হলো। ওর সামনে আমি কী করে দাঁড়াব।’

চকবাজারেই কাপড়ের ব্যবসা করেন তিনি। দেখে শুনেই মেয়েকে রাজুর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আগুনের খবর মোবাইলে পেয়ে ছুটে আসি। কিন্তু দোকানের কাছেই যেতে পারিনি। পরে শুনেছি ওরা আগুনের ভয়ে দোকানেরর সাটার বন্ধ করে দিয়েছিল। আর বের হতে পারেনি। ওখানেই ওরা…!

রানা-রাজুর বাবা সাহেব উল্লাহর বন্ধু নিজাম উদ্দিন ঢামেক হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাকাটি করে বলছিলেন, নিজের ছেলের মতো ওদের ভালোবাসি। কত স্মৃতি ওদের সঙ্গে। পরিশ্রমী ছেলে দুটা এভাবে মারা যাবে ভাবতে পারছি না। বন্ধু আমার ব্যবসা করতো এখন বয়স হয়েছে। রানা রাজুই ছিল উপার্জনক্ষম। ছেলে দুটা মরে যাওয়ায় বন্ধুর বেঁচে থাকার মেরুদণ্ডই ভেঙে গেল।

তিনি জানান, রাজুর মরদেহের সিরিয়াল ৪০, রানার ১২। মরদেহ নিয়ে গ্রামেরবাড়ি যাব। সেখানেই দাফন হবে।