বিসিসি’র কর্মবিলম্বে বরিশালের রাতের নগরী এখন বড়ই ভয়ংকর!

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)

এম.এস.আই লিমনঃ রাতের বরিশাল নগরী বড়ই ভয়ংকর হয়ে উঠেছে!বহুদিন সড়ক বাতী কেটে যাওয়ার পরেও নতুন বাল্পের মজুদ না থাকায় বিসিসি ব্যার্থ হওয়ায় সড়ক গুলো অন্ধকারে ডুবে থাকার ফলে।দীর্ঘ দিন যাবৎ বরিশাল সিটির বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ল্যাম পোষ্ট গুলোর বাতি থাকলেও অধিকাংশ গুলোই জ্বলছে না।ফলে সাধারন পথচারীরা রাতের আঁধারের ক্ষুদে ছিনতাইকারীদের কবলে পরতে হচ্ছে প্রায়শই।স্থানীয় থানা পুলিশের বক্তব্য সড়ক বাতী নষ্ট থাকার ফলে অলিগলির লাইট পোষ্ট গুলোয় বাল্প জ্বলেনা সে কারনে অন্ধকারকে পূঁজি করে ছিনতাই কারীরা ওত পেতে পথচারী দের মূল্যবান জিনিস সহজেই ছিনিয়ে নেয়।

এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগে যানানো হয়েছে তারা অচিরেই বাল্প লাগাবে বলে জানিয়েছে। জানা গেছে বরিশাল সিটির বিভিন্ন এলাকার সড়ক এলাকাগুলোর বেশ কয়েক স্থানের সড়ক বাতিগুলো পর্যায় ক্রমে নষ্ট হয়ে সব মিলিয়ে ১৪ শ বাল্প ফিউজ হয়ে আছে মাস খানেক যাবৎ। গেল বছরের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে জাতীয় একাদশ নির্বাচন উপলক্ষে অল্প সংখ্যক বাল্প এনে তা ল্যাম পোষ্ট গুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোতে স্থাপন করা হয়েছে।

তবে বরিশাল সিটির বিভিন্ন এলাকা মহল্লাগুলোর সরেজমিনে দেখা গেছে গুরুত্ব পূর্ণ সড়ক ঘেষে যে সকল লাইটপোষ্ট তার অধিকাংশেরই বাল্প পর্যায় ক্রমে নষ্ট হয়ে পরে থাকায় সরু সড়ক গুলো রাতে অন্ধকারে ঢুবে রয়েছে। একাধিক নগরবাসীদের অভিযোগ প্রায় মাস খানেক ধরে নষ্ট বাল্প গুলো পরিবর্তন করছে না সিটি কর্পোরেশন কতৃপক্ষ। তাদের কাছে গিয়ে নগর ভবনে একাধিক বার সমেস্যার কথা জানালেও তারা বাল্প নেই বলে সাফ সাফ জানিয়ে দেয়।বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মধ্য ভাগ ১৫ নং ওয়ার্ডের বটতলা এলাকার আলেকান্দা পুলিশ ফাড়ির সম্মূখ্যের মরহুম ডাক্তার এম এ রশিদ এর বাড়ীর সড়কে বিসিসি’র প্রায় ২থেকে সাড়ে তিনশত ভোটার নাগরিক পরিবারের বাসস্থান।

মধ্যমনিতে সিটিতে থেকেও নাগরিক অধিকাংশ সুযোগসুভিধা থেকেই বঞ্চিত হয়ে আসছে। গুরুত্বপূর্ণ এ এলাকার সড়কটি এখনও কাদা মাটিতেই রয়েছে।সাবেক দুই পরিষদের মেয়রদের আমলে পাকা রাস্তার প্রস্তাবনার অনুমোদন হলেও আদৌও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। অপরদিকে প্রয়াত সাবেক সিটি মেয়রের আমলের সময় পাকা সড়ক করার টেন্ডার হয়ে কার্যাদেশের পর একটি মাত্র ইট স্থাপন না করেও পাকা সড়ক করার বরাদ্দকৃত অর্থ কাজ সম্পূর্ণ দেখিয়ে উত্তোলন করে ভোগ করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সহ বিসিসি’র কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারাও বলে অভিযোগ করে বসবাসরত একাধিক বাসিন্দারা। সড়কটিতে বিসিসি কতৃক ৪ টি ল্যাম পোষ্ট স্থাপন করা হলেও তিন মাসে দু মাস ই অন্ধকারে ডুবে থাকে সম্পুর্ণ বাড়িটি৷

বিসিসি’র সংশ্লিষ্টরা মনিটরিং এর দায়িত্বে থাকলেও ভূল ক্রমেও ফিউজ হওয়া নষ্ট বাল্প পরিবর্তনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করছে না।বিপরীতে সংশ্লিষ্টদের মাস ব্যাপী তাদের সমেস্যা উপস্থাপন করে ক্লান্ত হলেও বাল্প নেই প্রোডাকশন বন্ধের বুলি দিয়েই নির্বাচনী ওয়াদায় সান্ত্বনা দিয়ে আসছে ধারাবাহিক ভাবে। এমনই নগরীর প্রায় অনেক সুবিধা বঞ্চিত নগরবাসীদের অভিযোগের বিষয় বস্তু এমনটাই। তাদের অভিযোগ তারা তাদের উপর আরপ করা সকল ভ্যাট ট্যাক্স নিয়মিত পরিশোধ করে আসলেও তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে করা হচ্ছে বঞ্চিত।

তারা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র কাছে বিনীত আবেদন জানায় সঠিক নির্নয়ে সমান ভাবে নাগরীকদের প্রাপ্য তাদের সকল কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করতে হস্তক্ষেপ কামনা করে। বিসিসি’র বিদ্যুৎ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদ মুরাদ জানায় তাদের মজুদে থাকা বাল্প শেষ নতুন করে না আসা পর্যন্ত কিছুই করতে পারছে না। বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মনিরুল ইসলাম স্বপন দেশ জনপদকে বলেন,বিসিসি’র সড়কে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৪ শ বাল্প কেটে গেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করে।কিন্তু এমন পরিস্থিতেও তাদের স্টোরে বাল্প মজুদ না থাকায় সমেস্যার সমাধান সম্ভব হচ্ছে না।

প্রতিমাসে সিটি’র সড়ক বাতী সহ অন্যান্য বাল্পের প্রয়োজন রয়েছে ২হাজার পিচের। প্রতি মাসেই বাল্প গুলো কেটে যায়। মেয়র মহোদয় কে নাগরীকদের করা অভিযোগ আর সমেস্যার বিষয় অবহিত করা হলে তার নির্দেশনা মোতাবেক ৩০ ওয়াডের ১হাজার পিচ,৬৫ ওয়াডের ৫শত পিচ ও ২৬ ওয়াডের ৫শত পিচ এ্যানার্জী বাল্প মোট নতুন দুই হাজার পিচ এমএপি কম্পানি থেকে সরবরাহ করা হয়েছে গতকাল। বরিশাল সিটির বিভিন্ন এলাকার সড়কে ল্যাম পোষ্টের নষ্ট হওয়া বাল্প গুলো অতি দ্রুতই পর্যায় ক্রমে পরিবর্তন করে নাগরীকদের রাতের অন্ধকারের সমেস্যা সমূহ দুর করার কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু করা হয়েছে বলেন তিনি।

বরিশাল সিটি কর্পোরশন (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রতিবেদককে এ বিষয়ে বলেন, নাগরিকদের সমেস্যার বিষয় তিনি শোনা মাত্রই জরুরী ভিত্তিতে নতুন বাল্প এমএপি থেকে সরবরাহের নির্দেশনা প্রদান করে তা দ্রুত স্থাপন করার নির্দেশ দিয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। এ সময় তিনি আরো বলেন,মেয়রের দায়িত্বে থাকা অবস্থাতে একজন নাগরীকও যেন কোন ধরনের নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে কঠোরভাবে নজর দিয়ে নাগরীক সেবার মান বৃদ্ধি করে সেবা প্রদানের নির্দেশনা ইতোমধ্যেই বিসিসি’র সকল দপ্তরের কর্তব্যরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের দিয়ে দেয়া হয়েছে।