৪১তম বিসিএস’র প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে ছুটি চেয়েছিলেন পাবনার আতাইকুলা থানার এসআই হাসান আলী। ছুটি না দেয়ায় ওসির সঙ্গে তর্কের পর থানার ছাদে উঠে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি।
এমনটাই দাবি করছেন নিহত পুলিশ সদস্যের বাবা। এসআই হাসান আলী যশোরের কেশবপুরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ভ্যানচালক জব্বার আলীর ছেলে। সোমবার নিজ গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
হাসান আলী ৩৭তম আউটসাইট ক্যাডেট হিসেবে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশে যোগ দেন। এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাবনার আতাইকুলা থানায় এসআই হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
কেশবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলা জানান, হাসান আলীর মরদেহ পাবনার আতাইকুলা থেকে রোববার রাতে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। রাতেই শত শত মানুষ তাকে একনজর দেখতে ভিড় জমায়। সোমবার সকালে বাড়ির পাশেই হাসান আলীর জানাজা হয়। এরপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
হাসান আলীর বাবা জব্বার আলী বলেন, আমার এক মেয়ে ও এক ছেলে। অভাবের সংসারে অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছি। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করে নিজের যোগ্যতায় পুলিশে চাকরি পায়। ট্রেনিং শেষে গত বছর পাবনার আতাইকুলা থানায় এসআই পদে যোগ দেয়।
তিনি আরো বলেন, বুধবার হাসান তাকে জানান- ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিতে শুক্রবার খুলনায় আসবেন। কিন্তু ওসি তাকে ছুটি দেবেন না। এ নিয়ে ওসির সঙ্গে হাসানের তর্ক হয়। পরীক্ষার জন্য ছুটি না দেয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
কেশবপুর থানার ওসি জসীম উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
রোববার সকালে পাবনার আতাইকুলা থানার ছাদে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এসআই হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আতাইকুলা থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, রাতে খাবার খেয়ে থানার ব্যারাকের একটি কক্ষে ছিলেন এসআই হাসান আলী। রাত ২টার দিকে তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য থানার ছাদে যান। সেখানে তিনি রাতের কোনো এক সময় পিস্তল দিয়ে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
রোববার বাদ এশা পাবনা পুলিশ লাইন্স মাঠে তার প্রথম জানাজা হয়। জানাজা শেষে ওই রাতেই পরিবারের লোকজন মরদেহ যশোরের কেশবপুরে নিয়ে যান।