বেশীরভাগ স্মার্টফোন ইউজারই অ্যান্ড্রয়েড ইউজ করে। আর এই অ্যান্ড্রয়েডে হাজার রকম অ্যাপস থাকে।
যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় এই হাজার রকম অ্যাপসের মধ্যে কোন দশটি অ্যাপস বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয়? হাতে গুণে দু’একটির নাম বলতে পারলেও বাকিগুলোর নাম বলতে হকচকিয়ে যাবেন। কিন্তু এই দশটি অ্যাপ আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করছেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক এই দশটি অ্যাপ কি কি?
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। শুধু অ্যান্ড্রয়েড নয় বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোনে এই ‘ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং’ অ্যাপ ব্যবহার করা যায়। মেসেজিং ছাড়াও ভয়েস কলস, ভয়েস মেসেজেস, ইমেজ শেয়ারিং, গ্রুপ চ্যাটিং ছাড়াও আরও বেশ কিছু সুবিধা আছে হোয়াটসঅ্যাপে। প্রতিদিন ১০ লাখ মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড করছেন।
ফেসবুক মেসেঞ্জার:
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসটিও একটি ‘ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং’ সার্ভিস। মোবাইল কিংবা ডেস্কটপেও ব্যবহার করা যায় ফেসবুক মেসেঞ্জার। এ অ্যাপে ছবি, ভিডিও, স্টিকার, অডিও ফাইল, ভয়েস ও ভিডিও কল আদান-প্রদান করা যায়। গত এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১২০ কোটি।
মোবাইল কিংবা ডেস্কটপে ছবি আদান-প্রদানের এ সোস্যাল সাইটটি দিন দিন ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসগুলোর তালিকায় এটি তৃতীয় ইনস্টাগ্রাম। প্রতি মাসে এর সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮০ কোটি। এর মধ্যে ৫০ কোটি মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করছেন ইনস্টাগ্রাম। প্রতিদিন প্রায় ৭ কোটির বেশি স্থিরচিত্র ও ভিডিও আদান-প্রদান করা হয় ইনস্টাগ্রামে।
সোস্যাল সাইট অ্যাপসগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি হলেও গোটা বিশ্বে এর অবস্থান চতুর্থ। তবে একসময় বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড ছিল ফেসবুক। কিন্তু এর জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে। গত জুন পর্যন্ত ফেসবুকে মাসিক ইউজার সংখ্যা ছিল ২০০ কোটির কিছু বেশি।
ফেসবুকের অ্যাপ ‘ফেসবুক লাইট’ জনপ্রিয়তা বিচারে পাঁচে। দু’বছর আগে এ অ্যাপটি ছাড়ে ফেসবুক। সাশ্রয়ী দামের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ও কম গতির ইন্টারনেট চালাতে ফেসবুক লাইট কার্যকরী। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ অ্যাপটির ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল ২০ কোটি। স্মার্টফোনে ‘ইনস্টলেশন’-এর জন্য ২ মেগাবাইটের চেয়ে কম জায়গা নেয় এই অ্যাপ।
মোবাইল ই-কমার্সের জন্য উইশ ভীষণ জনপ্রিয় ব্রাজিল, চীন এবং উত্তর আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপে। এই শপিং অ্যাপটি ফ্রি জনপ্রিয়তার দিক থেকে ছয়ে। ২০১৩ সালে সান ফ্রান্সিসকোয় যাত্রা শুরু করে ‘উইশ’। সম্প্রতি এ প্রকল্পে ৮০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
জনপ্রিয়তায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী চলছে স্ন্যাপচ্যাটের। ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা অ্যাপটির প্রতিদিন ব্যবহারকারী প্রায় ১০ কোটির বেশি। ছবি আদান-প্রদান ছাড়াও মাল্টিমিডিয়া মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে স্ন্যাপচ্যাট বেশ জনপ্রিয়। প্রতিদিন স্ন্যাপচ্যাটে ভিউয়ারের সংখ্যা এক কোটির বেশি। স্ন্যাপচ্যাটে প্রতিদিন ১ মিলিয়ন স্ন্যাপ তৈরি করা হয়।
ক্লান্তিহীন দৌড়ের মোবাইল গেম সাবওয়ে সার্ফারস। ডেনমার্কেল কিলো ও সাইবো গেমস সমন্বিতভাবে এ গেম তৈরি করেছে। জনপ্রিয়তার দিক থেকে এটি ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসের তালিকায় আটে। প্রতি মাসে এ গেমের ডাউনলোডের সংখ্যা তিন কোটির বেশি।
গান ও ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জন্য দারুণ জনপ্রিয় সুইডেনে তৈরি করা এ অ্যাপ। ২০০৮ সালে যাত্রা শুরুর পর বর্তমানে অ্যাপটির মোট আয় ১৬০০ কোটি ডলার। এর মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা ১৪ কোটি। গত জুলাই পর্যন্ত পয়সা খরচ করে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ছিল ছ’কোটিরও বেশি।
ফেসবুক লাইটের মতোই মেসেঞ্জার লাইট। জনপ্রিয়তায় এ অ্যাপটি দশম। ১০ মেগাবাইটেরও কম এই অ্যাপে বার্তা, ছবি ও ইন্টারনেট লিংক পাঠানো যাবে সহজে। স্টিকার দেখা যাবে। শতাধিক দেশে মেসেঞ্জার লাইটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি।