বিয়ে করলেন ৩৮ ইঞ্চি’র আব্বাস

:
: ৮ মাস আগে

বিয়ে করেছেন বাগেরহাটের ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার যুবক আব্বাস শেখ (২৫)। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনার ডাকবাংলো এলাকার সেলিম গাজীর মেয়ে (খর্বাকার) সোনিয়া খাতুনের (২০) সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দুই পরিবারের সম্মতিতে ১ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

 

নববিবাহিত আব্বাস শেখ রামপাল উপজেলার শ্রিফলতলা গ্রামের আজমল শেখের ছেলে। তিনি রামপাল সরকারি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার স্ত্রী সোনিয়া খাতুন খুলনার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার উচ্চতা ৩৭ ইঞ্চি।

ছোটবেলা থেকেই আব্বাসের উচ্চতা অনেক কম। যার কারণে প্রতিনিয়ত বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী, সহপাঠী এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হাসির পাত্র ছিলেন তিনি। কিন্তু সব মানুষের উপহাস পেছনে ফেলে পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন আব্বাস। স্নাতক পাস করার পর মাস্টার্স সম্পন্ন করার ইচ্ছে রয়েছে তার। স্ত্রীকেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন আব্বাস শেখ।

আব্বাস শেখ বলেন, ‘শারীরিক উচ্চতা কম হওয়ায় অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতেন। কারো কথা নিয়ে আমি মাথা ঘামায়নি। বন্ধুরা বলত, আমি কখনো বিয়ে করতে পারব না। আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। আল্লাহর রহমতে বিয়ে করেছি। শান্তিতে সংসারও করব।’

 

সোনিয়াকে কিভাবে পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘বছর দেড়েক আগে ওকে পরিবারের পক্ষ থেকে পছন্দ করে রেখছিল। গত ২০ অক্টোবর দুই বোন জামাইসহ আমি সোনিয়াকে দেখতে যাই এবং তাকে আমার পছন্দ হয়। আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আমি আমার স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। পরিবারের পছন্দতে বিয়ে করেছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারি।’

আব্বাসের মা  নাজমা বেগম বলেন, ‘ছোটবেলায় এক হাতে বই আর এক হাতে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছি। অনেক কষ্টে ও মানুষের কথা শুনে ছেলেকে পড়ালেখা শিখিয়েছি। আমার দুইটি মেয়ে রয়েছে। আব্বাস আমার একমাত্র ছেলে। অনেক কষ্টের ধন আমার। ওর জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।’

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. এম. আশরাফুল আলম বলেন, আমি আব্বাসকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি। বিয়েতে আমাকে দাওয়াত করেছিল। তার গায়ে হলুদে উপস্থিত ছিলাম। নবদম্পতিকে আমি শুভেচ্ছা জানাই। খর্বাকার মানুষদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা না করে তাদের প্রতিটি কাজে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ তারা আমাদের সমাজের বোঝা নয়, সঠিকভাবে তাদের খেয়াল রাখা হলে তারা সম্পদে পরিণত হবে।