ইরানের রাজধানী তেহরানের ইমাম খামেনি বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের মরদেহ ফেরত পাঠানো শুরু করেছে ইরান। রোববার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ১১ জনের মরদেহ পৌঁছেছে। গত ৮ জানুয়ারি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মাথায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
ইউক্রেনের পতাকা দিয়ে মোড়া ১১টি কফিনে করে ওই মরদেহগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি, প্রধানমন্ত্রী ওলেকসি গোনচারুক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা কিয়েভের বোরিসপিল বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
তেহরানের ওই বিমান দুর্ঘটনায় ইরানের ৮২ জন, কানাডার ৫৭ জন, ইউক্রেনের ১১ জন, সুইডেনের ১০ জন, আফগানিস্তানের চারজন এবং যুক্তরাজ্যের তিনজন নিহত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি তেহরানে বিধ্বস্ত হয়।
ইউক্রেনের নিহত ১১ জনের মধ্যে নয়জনই ছিলেন বিমানের ক্রু সদস্য এবং দু’জন ছিলেন যাত্রী। মরদেহগুলো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের স্টাফদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মরদেহের কফিনগুলো কিছু সময়ের জন্য বিমান বন্দরের টার্মিনালে রাখা হয়েছে যেন নিহতদের স্বজন এবং ইউক্রেন এয়ারলাইন্সের সদস্যরা শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। সোমবার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৮ জানুয়ারি ১৭৬ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় ইউআইএ বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি। দুর্ঘটনার পর পরই সন্দেহের তীর ইরানের দিকে যাচ্ছিল। তবে প্রথমদিকে এই ঘটনার দায় অস্বীকার করলেও পরে ইরান জানায় যে, ভুলবশত ইউক্রেনের বিমানটি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইরান যেন এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দেয় এবং নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয় সেই দাবি জানিয়েছেন ইউক্রেনের নেতারা। গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর দ্বিতীয় শক্তিধর ব্যক্তি ছিলেন জেনারেল সোলেইমানি। তার মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ জানুয়ারি ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টার পরেই ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ভুলবশত বিমানটি ভূপাতিত করার ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান। একই সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় দোষীদের বিচার করা হবে।