বিধ্বস্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবারও নেপালের আকাশে একঘণ্টা অপেক্ষায় বাংলাদেশি বিমান

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বিধ্বস্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই- নেপালের কাঠমাণ্ডুতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই এবার বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটকে অবতরণের অনুমতি না দিয়ে আকাশে দাঁড় করিয়ে রাখলো কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা:) আন্তজাতিক বিমানববিমানবন্দর ত্যাগ করা বিজি০০৭১ ফ্লাইটটিতে ছিলেন বিমানমন্ত্রীসহ শতাধিক যাত্রী।

দুর্ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে কাঠমুন্ডু যাচ্ছিলেন তিনি। ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনার খবর সংগ্রহের কাজে নেপাল আসা একদল সংবাদ কর্মী ছিলেন এই ফ্লাইটে।

ইউএস বাংলা’র ফ্লাইটের প্রাণঘাতি দুর্ঘটনার পর এটাই ছিল বাংলাদেশ থেকে যাওয়া প্রথম ফ্লাইট।

বিমানের ফ্লাইটটিতে কাঠমান্ডু ফিরতে থাকা নেপালের নাগরিক সুমিত বললেন, কালকের ঘটনার পর আজকের এই পরিস্থিতিতে আমি সত্যি ভীত। মনে মনে দোয়া করছি যেন ভালো ভাবে পৌঁছাতে পারি।

পরে বাংলাদেশ সময় ২টা ৩ মিনিটে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে রানওয়ে স্পর্শ করে ফ্লাইট। ককপিট থেকে নেমে এসে যাত্রীদের ধন্যবাদ দেন পাইলট।

আগের দিন সোমবার ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু গিয়ে সেখানকার আকাশে প্রায় আধাঘন্টা অপেক্ষা করেও অবতরণের অনুমতি না পেয়ে ঘুরতে থাকা ইউএস-বাংলার ফ্লাইটের দুই ইঞ্জিনের এক্টিতে আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখতে পান পাইলট।

পরে তাকে নামার অনুমতি দিলেও ত্রিভুন বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে দেয়া হয় ভুল তথ্য। ফলশ্রুতিতে প্রান হারান অর্ধশতাধিক যাত্রী ও ক্রু।

অন বোর্ড ইনফরমেশন অনুসারে, বিমান মন্ত্রীসহ বিজি ০০৭১ ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে অবতরনের জন্য ত্রিভুবন বিমানবন্দরের আকাশে পৌঁছায়। গন্তব্যস্থল থেকে মাত্র ৪৯ মাইল দুরত্বে থাকাকালীন ফ্লাইট এট্যান্ডেন্ট নুসরাত জানান, কাঠমান্ডুরর আকাশে ঝলমলে রোদ।

বিধ্বস্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবারও নেপালের আকাশে একঘণ্টা অপেক্ষায় বাংলাদেশি বিমান

কিন্তু ট্রাফিক কিউ থাকায় আমাদের ৩০ মিনিট পর বিমান অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার কন্ট্রোল টাওয়ারের উদ্ধৃতি দিয়ে আরো ৩০ মিনিট অর্থাৎ এক ঘন্টা পর অবতরণের কথা জানান ফ্লাইটের কো-পাইলট।

এরপর হিমালয় পাদদেশের আকাশে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে বিমান। মিনিট দশেক দাঁড়িয়ে থাকার পর আকাশে ঘুরতে থাকেন পাইলট। উঠে যান ২৫ হাজার ফুট উপরে।

ঘুরতে থাকেন ৫ হাজার, ১২ হাজার ১৮ হাজার ফুটচ্চতায়। আধাঘন্টা পর তিন দফায় ঝাকুনি খায় বিমান। ফ্লাইট এটেন্ডের মাথায় এসে পড়ে আরেক যাত্রীর পানির বোতল।

প্রসঙ্গত, গতকাল দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পড়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস২১১ ফ্লাইটটি। এতে ৫০ জনের মতো মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে নেপাল পুলিশ।

তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত ৪১জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকা থেকে যাওয়া ৭৮ আসনের ড্যাশ প্লেনটিতে পাইলট-ক্রুসহ মোট ৭১ জন আরোহী ছিলেন।