সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পোশাক কারখানা গড়ে তুলেছেন আব্দুর রহমান বাবলু নামে এক ব্যবসায়ী। এতে পড়াশোনার পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।
জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। নতুন ভবনে পাঠদান শুরু হলে পুরাতন বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে ভাড়া দেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
চুক্তিপত্রে দেখা যায়, আব্দুর রহমান বাবলু টেইলারিং ব্যবসার জন্য ৬ হাজার টাকা জামানতের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন। মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। ভাড়ার টাকা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অনুকূলে বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাড়া নেওয়া কক্ষগুলোতে সেলাই মেশিন বসিয়ে জনবল নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করে তা বিক্রি করছেন বাবলু।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফ্যাক্টরি থাকায় পড়াশোনার চরম ক্ষতি হচ্ছে। কারখানার মেশিনের শব্দের পাশাপাশি শ্রমিকদের উচ্চ স্বরে কথাবার্তায় এখানে শিক্ষার পরিবেশ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।’
স্থানীয়রা বলেন, বিদ্যালয়ের কক্ষে গার্মেন্টস স্থাপন করা হয়েছে। এখানে সব সময় লোকজন চলাচল করে। এই পরিবেশে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে লেখাপড়া করা সম্ভব নয়।
নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ৩টি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, দ্রুত পোশাক কারখানাটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য।’
ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বাবলু বলেন, ‘গত বছরের ১ ডিসেম্বর ঘরগুলো ভাড়া নিয়েছি। ঈদের আগে একটু বেশি অর্ডার পাচ্ছি। তাই কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে অভিযোগ দিচ্ছে।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল হাসান লাভলু বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা মেনে ও ম্যানেজিং কমিটির সবার অনুমতি নিয়েই পরিত্যক্ত ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে। যদি কারো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে ম্যানেজিং কমিটিকে অবগত করুক।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছাকমান আলী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ঘর ভাড়ার বিষয়টি শোনার পর প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। এ কারণে যদি শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়, কেউ অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’