বিদেশে তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশি ছবির বাজার

:
: ৬ years ago

এর আগে ব্যক্তি উদ্যোগে মিলনায়তন ভাড়া করে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি বাণিজ্যিক ছবির প্রদর্শন হয়েছে। কিন্তু দুই বছর হলো চিত্র কিছুটা পাল্টেছে। এখন বাংলাদেশি ছবি পরিবেশকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। এর মধ্যে এখানকার বেশ কয়েকটি ছবি ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মুক্তি পেয়েছে।

২০১৬ সালের শুরুর দিকে ‘অস্তিত্ব’, ‘মুসাফির’, ‘সম্রাট’ ছবিগুলো দেশের বাইরে মুক্তি পায়। সে সময় ছবিগুলো অতটা সুবিধা করতে পারেনি। তবে পরবর্তীকালে ‘শিকারি’, ‘আয়নাবাজি’, ‘নবাব’ ছবিগুলো দেশের বাইরে দর্শক আলোচনায় আসে।

এর পরপরই ‘ঢাকা অ্যাটাক’ দেশের বাইরে বাঙালিদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলে দেয়। এ পর্যন্ত দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি দেশে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের পর পর্যায়ক্রমে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আরব আমিরাত, ওমান, ইতালি, ফ্রান্স, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরে মুক্তি পায় এই ছবি।

দেশের বাইরে এসব ছবির পরিবেশনা প্রতিষ্ঠানের একটি স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো। এর বাংলাদেশি প্রধান নির্বাহী সৈকত সালাউদ্দিন বলেন, ‘কানাডায় আয়নাবাজি দারুণ সফল। নবাব মধ্যপ্রাচ্যের দর্শকদের জয় করেছে। আর ঢাকা অ্যাটাক আমেরিকা, কানাডা, ওমান, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে সফল।’

বিদেশে বাংলা ছবির দর্শক কি শুধুই বাংলাদেশি? নাকি বিদেশিরাও? এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ছবির সঙ্গে ইংরেজি, মালয় ও আরবি সাবটাইটেল থাকার কারণে ৫ থেকে ১০ ভাগ বিদেশি দর্শকও পাওয়া যায়।’

ছবি মুক্তির নতুন এই দিগন্ত নিয়ে দারুণ আশাবাদী ‘আয়নাবাজি’ ছবির পরিচালক অমিতাভ রেজা। তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে বাংলাদেশি ছবির বাজার বাড়ছে। সে সময় কানাডায় ‘আয়নাবাজি’র টানা ২৮টি শো হয়েছিল। এখন শুনছি, ‘স্বপ্নজাল’-এর নাকি টানা ১০০-এর বেশি শো হবে। এ তো বিরাট ব্যাপার!’

এই নির্মাতা আরও বলেন, ‘দেশের বাইরেই বাংলা ছবির মূল ব্যবসা হবে। কারণ সেখানে ছবির মুক্তি, আয়-সবকিছুর স্বচ্ছতা আছে। আমাদের এখানে নেই।’

এরই মধ্যে কানাডার পাঁচটি শহরে শো শেষ করে ৪ মে আমেরিকার ফ্লোরিডা, ভার্জিনিয়া ও নিউইয়র্ক-এই তিন শহরে তিনটি প্রেক্ষাগৃহে উঠেছে স্বপ্নজাল। পরিবেশক সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে আরও কয়েকটি শহরের প্রেক্ষাগৃহে চলবে ছবিটি। ঈদের পরপরই ওমান ও আরব আমিরাতে মুক্তি পাবে স্বপ্নজাল।

ছবির পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘বাইরে থেকে যে এত সাড়া পাব, বুঝিনি। আমি খুবই উৎসাহ পাচ্ছি। তা ছাড়া প্রযোজকেরও বাড়তি আয় হচ্ছে। বাংলা ছবিতে দেশের বাইরে এ ধরনের দর্শক সমাগম হবে, বাড়তি আয় হবে-এমন সুযোগ আগে ছিল না।’

এদিকে আর এস মেডকমের পরিবেশনায় কানাডার টরন্টোতে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশি আরেকটি ছবি ভালো থেকো। ১২ মে থেকে ভ্যাঙ্কুভার, ক্যালগরিসহ আরও ছয়টি শহরে মুক্তি পাবে ছবিটি।

‘ভালো থেকো’ ছবির প্রযোজক জাহিদ হাসান অভি বলেন, ‘বিদেশে বাংলাদেশি ছবির বাজার বাড়ছে। তবে আমাদের পরিচালকেরা অবশ্যই যেন ছবি তৈরির সময় মানটা ঠিক রাখেন। তাহলে দেশের বাইরে বাংলাদেশি ছবির পথটা আরও সহজ হবে, প্রযোজকের ব্যবসাও হবে।’

এ ছাড়া এরই মধ্যে ‘প্রেমী ও প্রেমী’, ‘হালদা’, ‘ডুব’, ‘গহীন বালুচর’ ইত্যাদি ছবি দেশের বাইরে মুক্তি পেয়েছে।