১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বরিশাল সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে নানান কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। বিজয় উৎসবকে ঘিরে এরইমধ্যে বরিশাল নগরের বিভিন্ন স্থানে নির্মান করা হয়েছে তোরণ। লাগানো হয়েছে রাজনৈতৈক নেতাদের ব্যানার-ফ্যাষ্টুন। সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে বাহারি আলোকসজ্জা। আবার এরই মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর থেকে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে ৪ দিন ব্যাপী মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানমালা। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, আবৃত্তি, নৃত্য, সংগীত, গীতি আলেখ্যা ও নাটক।
অপরদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান সূচী ঘোষনা করা হয়েছে। যারমধ্যে প্রথমে রয়েছে ১৬ ডিস্মেবর সকাল ৬ টা ৩৫ মিনিটে জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে একত্রিশবার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবসের শূভ সূচনা করা হবে। রাত ৬ টা ৪০ মিনিট থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হবে। সকাল ৭ টা ১০ মিনিট থেকে ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন বধ্যভূমি অভিমূখে পদযাত্রা ও পুষ্পমাল্য অর্পন করা।
এদিকে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী বেসরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, ব্যাক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এছাড়াও সকাল ৯ টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয়পতাকা উত্তোলন এবং কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী করা হবে। সকাল ১০ টায় অভিরুচি সিনেমা হলের নীচতলায় ছেলেদের ও দ্বিতীয় তলায় মেয়েদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামান্য চলচিত্র দেখার ব্যবস্থা রাখা হবে। একই সাথে সকাল ১১ টায় নগরের বগুরারোডস্থ জীবনানন্দ দাশ স্মৃতিপাঠাগার ও ক্লাবে শিশুদের দেশাত্মবোধক গান ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হবে।
বেলা সাড়ে ১১ টায় মহিলা ক্লাবে জেলা পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন, মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য সন্মননা প্রদান ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন করা হবে। বাদ জু’মা জাতীয় শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনায়ও স্থানীয় সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং সুবিধাজনক সময়ে অন্যান্য সকল মন্দির গীর্জা ও উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। দুপুরে বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, সরকারী শিশু সদন, দুস্থ মহিলাদের আশ্রয়কেন্দ্রসহ অনুরুপ প্রতিষ্ঠানসমুহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বেলা আড়াইটায় ২ টায় সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মহিলাদের জন্য ক্রিড়াঅনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বেলা ৩ টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বনাম জেলা প্রশাসনের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় অশ্বিনী কুমার হলে সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরষ্কার বিতরনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে বিজয়ের দিনে বেলা ১ টা থেকে সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত বরিশাল বিআইডব্লিউ ঘাটে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর জাহাজ সকলের দর্শন এর জন্য উম্মুক্ত থাকবে। অপরিদেক বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির উদ্যোগে ও সপ্তমবারের মত মুক্তিযুদ্ধের তথ্য ও দলিলপত্র প্রদর্শনীর দিনব্যাপি আয়োজন করা হয়েছে। যে প্রদর্শনীর সার্বিক সহযোগীতায় রয়েছে জেলা প্রশাসন। এছারাও বরিশাল জেলা ও ১০ উপজেলা প্রশাসন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল বিএম কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ অন্যান্য সংগঠন দিনব্যাপি বিজয় দিবসের নানান কর্মসূচী পালন করবে।