বিজয়ের মাসে বরিশালে লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা

:
: ৩ years ago

দেশজুড়ে এখন বিজয় উল্লাস, মহান বিজয় দিবস উদযাপনের অপেক্ষায় জাতি। মুক্তিকামী বাঙ্গালি তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময় এ মাসেই ছিনিয়ে এনেছিল বিজয়।

বিজয়ের এ মাসকে স্মরণ করে দিতে দেশের সকল শ্রেণীপেশার মানুষের হাতে একটি করে লাল-সবুজের পতাকা পৌঁছে দিতে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটছে লাল-সবুজের ফেরিওয়ালারা।

বিজয়ের এ মাসে বরিশাল শহরের অলিতে-গলিতে, স্কুল ও কলেজের সামনে সহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি গ্রামের হাট বাজারে পতাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীদের।

গতকাল শুক্রবার দেখা যায়, বরিশাল শহরের কাকলির মোড়ে একটি বাঁশের সঙ্গে ছোট-বড় লাল-সবুজের পতাকা বেঁধে বিক্রি করছেন আব্দুল সালাম নামের এক বৃদ্ধকে। লাল-সবুজের এ ফেরিওয়ালার কাছ থেকে বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পতাকা কিনছেন অনেকেই।

বছরের অন্য মাসে সে মৌসুমী ব্যবসায়ী হলেও এ মাসের জন্য লাল-সবুজের ফেরিওয়ালাই তার পরিচয়। আব্দুল সালাম বয়স তার ৫০ বছর। কিন্তু ২৫ বছর বয়স থেকেই তিনি এই পতাকা বিক্রি করে যাচ্ছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সালামের গ্রামের বাড়ি হলো ফরিদপুরে।

সালামে সংসারে রয়েছে বৃদ্ধ মা ও তিন মেয়। বড় মেয়কে বিবাহ দিয়েছে। আর ছোট মেয় ফরিদপুর ডিগ্রি কলেজে পড়েন। সালাম তার বৃদ্ধ মা ও সন্তানদের দেখা শুনা করছেন। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবসের পাতাকা বিক্রি করেন তিনি।

বাকি মাস গুলো গ্রামের বাড়ি রিক্সা চালান। সালামের মতো লাল-সবুজের ফেরিওয়ালার পথচলায় বর্ণিল হয়ে ওঠেছে বরিশাল শহরের পথ-ঘাট। মাইলের পর মাইল হেঁটে মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন একটি জাতীয় পতাকা।

এ যেন আন্তার টান। শুধু ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে এ লাল-সবুজের পতাকা বিক্রি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময় এ বিজয়, ডিসেম্বর এলেই শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুরু হয় জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম।

বিজয় দিবসে দেশের সবজায়গায় সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িতেও দেখা যায় বিজয় নিশান বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। পতাকা বিক্রেতা সালাম বলেন, ‘আমি শুধু লাভের জন্য নয়, দেশ প্রেম থেকেই পতাকা বিক্রি করি।

ডিসেম্বর মাস আসলেই আমি অন্য কাজ ছেড়ে দিয়ে ঢাকা থেকে বিভিন্ন মাপের পতাকা কিনে এনে বিভিন্ন শহরে বিক্রি করি। তিনি আরো বলেন, একেবারে ছোট পতাকা ২০ টাকা থেকে শুরু হয়ে মাপ অনুযায়ী ৪০, ৫০, ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।

ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করে আমার ১০-১৫ হাজার টাকা আয় হয়। সকল মানুষের হাতে একটি করে লাল-সবুজের পতাকা দিতে পারলে তার স্বার্থকতা আসবে বলেও তিনি জানান।