বিজিএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে আদেশ আজ

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

রাজধানীর হাতিরঝিলের ‘বিষফোঁড়া’ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙার জন্য সময় আবেদনের আদেশ সোমবার। একই সঙ্গে এদিন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে সংশোধন করে আবারও অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হবে। মামলাটি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আজকের কার্য তালিকায় রয়েছে।

২৮ মার্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে অঙ্গীকারনামা এবং সময় আবেদনে কিছু সংশোধন আনতে বলা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সংগঠনের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা পাওয়ার শর্তে সময়ের আবেদন বিবেচনার আশ্বাস দেন আপিল বিভাগ। অঙ্গীকারনামায় ভবিষ্যতে আর সময় না চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর বহুতল ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে সাত মাস সময় দেন আপিল বিভাগ। ওইদিন আদালতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ১২ মার্চ ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে ছয় মাসের সময় দেন আপিল বিভাগ। ওই সময় শেষ হওয়ায় একই বছরের ২৩ আগস্ট আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ৮ অক্টোবর সাত মাস সময় দেন আপিল বিভাগ। পরে এ সময় শেষ হওয়ার আগেই ফের এক বছর সময় চেয়েছে বিজিএমইএ।

১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএর প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ী খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডিএইচ এম মনির উদ্দিন।

পরদিন ৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সুয়োমোটো রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ দেন। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।

একই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএর আবেদনে হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। পরবর্তী সময়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের ২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়।

পরে একই বছরের ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন করেন বিজিএমইএ। ২০১৭ সালের ৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতো সময় লাগবে তা ৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ।

ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় রিভিউ আবেদন খারিজ করে ভবন ভাঙার রায় বহাল ও ভবন ভাঙতে ছয় মাস সময় দেন। পরবর্তীতে আরও এক দফা সাত মাস সময় দেন।