বিজয় দিবস উদযাপনে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত

লেখক:
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এদিন দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে জাতি। এ জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ঢাকার সাভারের অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দেশ বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ সকলের শ্রদ্ধা নিবেদন নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা।

 

স্মৃতিসৌধ চত্বরে ধোয়া-মোছার কাজ সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষে বাহারি রংয়ের ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। পুরোনো ফুলগাছগুলোর ডালপালা ছাটাইসহ বিভিন্ন সিঁড়িতে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পড়েছে রং তুলির আঁচড়।

স্মৃতিসৌধ চত্বর গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধ চত্বরে ধোয়া মোছার কাজ শেষ করা হয়েছে। পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে চত্বরের বিভিন্ন সড়ক। লেকের ময়লা সরিয়ে ফেলা হয়েছে নির্দিষ্ট স্থানে।

 

‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা এর যত মূল্য সে কি ধরার ধূলায় হবে হারা। স্বর্গ কি হবে না কেনা। বিশ্বের ভাণ্ডারী শুধিবে না এত ঋণ?’ প্রায় মুছে যাওয়া এ লোখাটিতে কালো রং দিয়ে তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাহারি রঙের ফুলগাছসহ টবগুলো সুসজ্জিতভাবে স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। পূর্বের ফুল গাছের পরিচর্যা করে সেগুলোকে সতেজ করেছেন মালিরা। বিভিন্ন সড়ক বাতিগুলোর লোহার পাইপে নতুন করে সবুজ রং করা হয়েছে।

 

 

শুধু স্মৃতিসৌধ চত্বরেরই নয়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়েকের বিভিন্ন স্থানে চলছে সংস্কারসহ সৌন্দর্যবর্ধণের কাজ। সড়ক ডিভাইডারে নতুন করে রং করা হচ্ছে। কিছু অংশে দুটি লেনের মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় রোপণ করা হয়েছে ফুলসমেত বিভিন্ন ধরণের ফুলের গাছ। স্থানটি পরিষ্কারও করা হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজন অনুসারের সড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে পিচের আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে।

সাভার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, দেড় মাস ধরে স্মৃতিসৌধ চত্বর ধোয়া-মোছা ও পরিষ্কারের কাজ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আমাদের প্রস্তুতি  সম্পন্ন হয়েছে। স্মৃতিসৌধের মূল বেদিসহ অন্যন্য স্থান ধোয়-মোছা ও রংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারবো।

মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে যেন কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে না পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান।

 

নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মহান বিজয় দিবসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন কুটনৈতিক মিশনের প্রধানগণসহ সকলে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধ আত্মোৎসর্গকারী শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সকলের নিরাপত্তার লক্ষে চার স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বহিরাগত কেউ আশপাশের এলাকায় অবস্থান করলে সে বিষয়ে পুলিশকে জানানোর জন্য স্থানীয়দের অনুরোধ করা হয়েছে।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান এসপি।

 

তিনি বলেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওইদিন প্রত্যুষে স্মৃতিসৌধে আসবেন এবং অধিক লোকের জমায়েত হবে এ বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কিছু নির্দেশনা রয়েছে। যে সকল গাড়ি উত্তরবঙ্গের দিক থেকে ঢাকায় আসবে সেগুলো ওইদিন চন্দ্রা ও গাজীপুর হয়ে এবং মানিকগঞ্জের দিক থেকে আসা গাড়ি নবীনগর মোড় হয়ে আশুলিয়া দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করবে। এছাড়া ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গাড়ীগুলো গাবতলী থেকে বেড়িবাঁধ হয়ে আশুলিয়া বা উত্তরা দিয়ে গাজিপুর হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে যাবে এবং মানিকগঞ্জের দিকের গাড়িগুলো বেড়িবাঁধ দিয়ে আশুলিয়া এবং নবীনগরমোড়ের এই সড়কটি ব্যবহার করবে।