বিকেলের পদ্মা এক্সপ্রেস ছাড়ল রাতে, ভোগান্তি চরমে

লেখক:
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

রাজশাহী থেকে চার ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ল পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন। রাজশাহী-ঢাকার মধ্যে চলাচল করা ট্রেনটি দীর্ঘ বিলম্বে ছাড়ার  কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শত শত যাত্রীদের। বুধবার (২৪ এপ্রিল) পদ্মা এক্সেপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার কথা ছিল বিকেল ৪টায়। কিন্তু সেই ট্রেন ছেড়ে যায় রাত ৮টায়।

জানা গেছে, পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটির এমন বিলম্বের কারণে অনেক যাত্রী স্টেশনের কাউন্টারে টিকিট ফেরত দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার বাসের টিকিট কেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়া ও টাকা নিয়ে যাত্রীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে। ফলে অনেক যাত্রী বাসের টিকিট কেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-ঢাকার মধ্যে চলাচল করা ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এসে পদ্মা এক্সেপ্রেস ট্রেন হিসেবে ছেড়ে যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাজশাহীতে পৌঁছায় প্রায় আড়াই থেকে পৌনে তিন ঘণ্টা দেরিতে। ট্রেনটি রাজশাহীতে পৌঁছেছে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে। এরপরে ওয়াস ফিডে গিয়ে পরিষ্কার হয়ে রাত ৮টায় ঢাকার উদ্দ্যেশে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন।

পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম যাবেন চাঁদপুরে। তাই তিনি ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে এই ট্রেনে উঠেছেন। এই যাত্রী জানান, তিনি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এসেছিলেন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে। টিকিট কাটা ছিল না। তার ইচ্ছে ছিল, স্ট্যান্ড টিকিটে তিনি ভ্রমণ করবেন। কিন্তু স্টেশনে আসার পরে জানতে পারেন পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়তে বিলম্ব হবে। এ সময় তিনি কিছুক্ষণ কাউন্টারের সামনে দাঁড়ান। অনেকেই কাউন্টারে টিকিট ফেরত দেন। সেখান থেকে তিনি একটি টিকিট কিনে নেন।

যাত্রী সাইলা খাতুন বলেন, গরমের মধ্যে এভাবে স্টেশনে বসে থাকা বাজে একটা অভিজ্ঞতা। দুই ঘণ্টা বলে চার ঘণ্টা দেরির বিষয়টি জানলে বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হতাম। কারণ এই ট্রেন গভীর রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে। তখন যানবাহনের জন্য বাইরে আসা একটু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।

যাত্রী সুমন রেজা বলেন, ট্রেন ছাড়ার টাইম ছিল বিকেলে ৪টায়। কিন্তু ট্রেন লেটের কারণে কর্তৃপক্ষ মাইকিংয়ে সময় দিয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টায় ট্রেন আসেনি। দীর্ঘক্ষণ স্টেশনে বসে ছিলাম। যেহেতু ট্রেনের সিডিউল টাইম ছিল বিকেল ৪টায়। তার আগে থেকেই স্টেশনে এসে বসে ছিলাম। কর্তৃপক্ষ টিকিট রিটার্নের কথা বলছিল। কিন্তু করিনি, যেহেতু ঢাকায় যেতেই হবে তাই।

তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে ছিলাম। এই গরমে একটা বাজে অভিজ্ঞতা হলো। এর মধ্যে কয়েকবার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করেছে। মশা কামড় দেয়। এখানে শিশু ও বয়স্ক মানুষগুলো বসে থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছেন। কিন্তু কী করবো, সবাই বসে ছিল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত। এই গরমে পোশাক পরে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা তো একটু কষ্টকর।

এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার আব্দুল মালেক জানান, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি আসতে দেরি করেছে। এই ট্রেনটি ৬টা ৫ মিনিটে রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছায়। এই ট্রেনটি আবার রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন হিসেবে।

কী কারণে ট্রেনের তেরি হলো জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। ঢাকা স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার বিষয়ে তারা জানেন না। তবে তার জানা মতে ঢাকা থেকে সঠিক সময়ে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়লেও পথে দেরি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে রাজশাহী রেলওয়ের স্টেশনের ম্যানেজার আবদুল করিমের মুঠোফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।