বিএনপি নির্বাচন থেকে পিছটান দিতে ছুতা খুঁজছে: শেখ হাসিনা

:
: ১ বছর আগে

নিজেদের অপকর্মের জন্য ভোট পাবে না জেনে বিএনপি নির্বাচন থেকে পিছটান দিতে ছুতা খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জেনেভার হিল্টন হোটেলে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমনিতে তো তারা (বিএনপি) চোরের দল, ভোট ডাকাতের দল, ভোট ডাকাতি ছাড়া তো তাদের পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব না। আর যারা দেশের সম্পদ বেচার মুছলেকা দিয়ে এসেছিল জনগণ আর তাদের চায় না, সেই জন্য তারা ভোট পায় না।’

‘তারা জানে যে ভোট পাবে না। সেই জন্য তারা নানা ভাবে ছুতা খোঁজে, কিভাবে পিছটান মারবে (নির্বাচন থেকে) সেই তালেই তারা আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সময় মতো নির্বাচন হবে, জনগণ ভোট দেবে, জনগণ ভোটের মালিক যাকে খুশি তাকে দেবে, যে জনগণের ভোট পাবে সে সরকার গঠন করবে। এটাই গণতান্ত্রিক ধারা, আর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে।’

বিএনপি সরকার ফেলে দিবে সরকার এতটা দুর্বল নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর তোলপাড়, একেবারে সরকারকে ফেলেই দিবে। এত দুর্বল অবস্থায় তো আমরা আসি নাই যে আমাদের ফেলে দিবে। আমাদের তো জনগণ আছে। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণ।’

বিএনপির নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিরোধিতা করে দিয়ে করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্পূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আমরা গঠন করে দিয়েছি। তারপরও বিএনপি এখন দাবি করে কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।’

বিএনপি শিশু পাগল হয়ে গেছে কিনা-প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে খালেদা জিয়া একবার বলেছিল পাগল আর শিশু ছাড়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ হয় না। তো এখন ওরা কি পাগল হয়ে গেল নাকি শিশু হয়ে গেল তাই আমি জানতে চাই। শিশু পাগল, এটা ভালো নাম। তারা এখন শিশু পাগল হয়ে গেছে।’

নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা দিনে দুপুরে মানুষ খুন করে, যারা লুটপাট করেছে, দুর্নীতি করেছে, আজকে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সেই আসামি যে দলের নেতা সেই দল নির্বাচনে যাবে কি নিয়ে সেটাই তো কথা। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য এখন নানা ধরনের অপপ্রচার, চার্তুয্য করে বেড়াচ্ছে।’

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে গণতান্ত্রিক ধারাটা প্রতিষ্ঠা হয়েছে বাংলাদেশে এটা আমাদের আন্দোলনের ফসল। এজন্য আমার পার্টির নেতাকর্মীরা জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। আর গ্রেনেড হামলা থেকে কোনমতে বেঁচে গেছি।’

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার সুফল তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই তো দেশটা পাল্টে গেছে, আজকে দেশের উন্নতি হয়েছে, আজকে বিশ্বে বাংলাদেশ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঐ চোরাদের ক্ষমতায় এনে, স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় এনে, খুনিদের এনে আমরা বাংলাদেশের মাথা অন্যের কাছে নত হতে দেবো না।’

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ যে মর্যাদা আজকে পেয়েছে এই মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলেবো।’

বাংলাদেশের যেকোনো ক্রাইসিসে প্রবাসীরা ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে।’

হুন্ডির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের আহ্বান জানান সরকার প্রধান।

বিদেশ যেতে আগ্রহীদের দালালের বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। একই সঙ্গে বৈধ পথে রেজিস্ট্রেশন করে বিদেশে যাওয়ার জন্যও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।