বিএনপির বিপর্যয়ের কারণ ‘মনোনয়ন বাণিজ্য’, বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

সংসদ নির্বাচনে ‘মনোনয়ন বাণিজ্য’ বিএনপির বিপর্যয়ের প্রধান কারণ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কিছুসংখ্যক বিএনপি প্রার্থী তাদের দলের শীর্ষ নেতাদের কথামতো দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়েছিলেন। দূতাবাস তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে অথবা অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলেন।

৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে যায় বাংলাদেশ ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রতিনিধি দল। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও বাংলাদেশ ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে তাঁর ওপর অগাধ আস্থা রাখা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যবসায়ীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। ওই প্রতিনিধি দলকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সব সময় মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ আমার ওপর যে আস্থা স্থাপন করেছে, আমি যেন তার প্রতিদান দিতে পারি।’

শেখ হাসিনা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে বিপুল সমর্থন দেওয়ার জন্য দেশের ব্যবসায়ী সমাজকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের সমর্থন আমাদের জনসমর্থন পেতে সহায়তা করেছে।’ নির্বাচনে মহাজোটে নিরঙ্কুশ বিজয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার জনগণ নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীকে ভোট দেয়নি। কেননা তারা নৌকাকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীক বলে মনে করে। তিনি বলেন, ‘এবার জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে খুবই আগ্রহী ছিল। এমনকি অনেক ভোটার কেবল প্রতীক দেখেই ভোট দিয়েছে। জনগণ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য যে রকম আবেগ দেখিয়েছিল এবারও তারা সেই একই আবেগ দেখিয়েছে।’

শেখ হাসিনা নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যয়ের জন্য ‘মনোনয়ন বাণিজ্য’কে প্রধান কারণ উল্লেখ করে বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিরোধী দলের আচরণ ছিল খুবই অদ্ভুত। বিজয়ী হবে—এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়নি তারা। তিনি বলেন, ‘তারা প্রতিটি আসনে টাকা নিয়ে তিন থেকে চারজন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। তারা নির্বাচনকে বাণিজ্য হিসেবে নিয়েছে, প্রতিযোগিতায় জিততে চায়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু সংখ্যক বিএনপি প্রার্থী তাদের দলের শীর্ষ নেতাদের কথামতো দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়েছিল। দূতাবাস তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদের রিটার্নিং অফিসারের কাছে অথবা অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলের নেতাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে তাঁরা প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, মনোনয়ন কেনার জন্য টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য একটি শক্তিশালী বিরোধী দল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা একটি শক্তিশালী বিরোধী দল পেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা যদি মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো হীন কাজে জড়িয়ে পড়েন তাহলে আপনি বিরোধী দল কোথায় পাবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ছাড়া আর কিছু পাওয়ার আশা করেন না। তিনি বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশের মানুষ বাসস্থান পাক, তাদের সন্তানেরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্যের অধিকার পাক, যাতে তাদের জীবন সুন্দর সমৃদ্ধ হয়। তিনি ব্যবসায়ীদের নিজ-নিজ এলাকার জনগণকে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের সাহায্য সহযোগিতা তাদের এলাকার প্রচুর মানুষের জীবন পাল্টে দিতে পারে। আর তখন বাংলাদেশের কোনো মানুষ দারিদ্র্যের কবলে নিপতিত থাকবে না।