সিরাজগঞ্জে অপহরণের ১২ ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া এক স্কুলছাত্রী বাড়িতে ফিরেই আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে শহরের মাহমুদপুর মহল্লা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
নিহত স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, গত দুই বছর ধরে একই মহল্লার আব্দুল আজিজের বখাটে ছেলে জিম (১৬) বিভিন্নসময়ে তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। এ ব্যাপারে তার অভিভাবকদের কাছে বার বার অভিযোগ করা হলেও লাভ হয়নি।
বুধবার (১৭ মার্চ) বখাটেদের অত্যাচারে বাধ্য হয়ে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে এক আত্মীয়ের ছেলের বাগদান সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু বখাটে জিম পুলিশকে ফোন করে ডেকে এনে বাগদান প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন।
পরদিন বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে বাসার সামনে থেকে জিমসহ মাহমুদপুর মহল্লার মৃত শাহিনের ছেলে জীবন, ফনির ছেলে অন্তর, হানিফের ছেলে রুমন ও চর রায়পুর মহল্লার ছাত্তারের ছেলে কাইয়ুম স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক থানায় অভিযোগ করে জয়ার বাবা শরীফ শেখ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ মনোরথ নামের একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে গভীর রাতে আনছার নামের মাহমুদপুর মহল্লার এক ব্যক্তি স্কুলছাত্রীকে থানায় পৌঁছে দেয়।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় জয়াকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাসায় যাবার পর রান্নাঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয় ওই স্কুলছাত্রী। সেখানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
পরে স্বজনরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, বিকেলে ওই স্কুলছাত্রীর অপহরণের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল। রাতে তাকে উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির অভিভাবকরা এ ব্যাপারে কোনো মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সিগ্ধ আক্তার বলেন, আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।