গত বুধবার হার্ট অ্যাটাকে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তার চিরপ্রস্থানে শোকাচ্ছন্ন ফুটবল বিশ্ব। আর্জেন্টাইন ফুটবল গ্রেটের মৃত্যুর পর প্রথম ম্যাচে তাকে যথাযোগ্য সম্মান দিতে জয়ের বিকল্প কিছু ভাবছিল না তার সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা। স্বদেশী কিংবদন্তিকে উপযুক্ত শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি ছিলেন লিওনেল মেসিও। রোববার ওসাসুনাকে ৪-০ গোলে হারানোর পথে গোলও করেছেন তিনি এবং তা উৎসর্গ করেছেন ম্যারাডোনাকে।
লা লিগায় বাজে ফর্মে বার্সেলোনা। আগের ছয় ম্যাচে মাত্র একটি জিতে ন্যু ক্যাম্পে তারা স্বাগত জানিয়েছিল ওসাসুনাকে, যারা গত জুলাইয়ে ২-১ গোলে জিতে ফিরেছিল এই মাঠ থেকে। কিন্তু ম্যারাডোনাকে শ্রদ্ধা জানানোর সর্বোচ্চ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে কাতালানরা। দিনামো কিয়েভের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৪-০ গোলের জয়ে বিশ্রামে থাকলেও মেসিকে নামান কোচ রোনাল্ড কোমান। ১৫ মিনিটে তার একটি শট নাচো ভিদাল ব্লক করলেও ৭৩ মিনিটে আসে মোক্ষম সুযোগ। তৈরি হয়েই এসেছিলেন তিনি।
দলের চতুর্থ গোলটি করার পর নিউয়েল’স ওল্ড বয়েজের জার্সিতে দেখা গেলো মেসিকে, জার্সি নম্বর ১০। আকাশের দিকে উঁচিয়ে ধরলেন দুই হাত। ম্যারাডোনাকে এভাবেই গোলটি উৎসর্গ করেন মেসি। এই ক্লাবটির হয়ে যখন যুব ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি, ওই সময়ে রোজারিওর ক্লাবটিতে বিদায়ের দিন গুনছিলেন ম্যারাডোনা।
মেসির সঙ্গে কিয়েভের বিপক্ষে না খেলা জোর্দি আলবা, ফ্রেঙ্কি ডে ইয়ং ও আতোঁয়ান গ্রিয়েজমানও ফেরেন এই ম্যাচে। ফেরান কোমান। ১১ মিনিটে গোল হয়েই যেতো বার্সার। সার্জিও হেরেরাকে ড্রিবলিং করে ফাঁকি দিয়ে গ্রিয়েজমানের কাট ব্যাক থেকে ফিলিপ্পে কৌতিনিয়ো শট নেন গোলমুখে, তাকে বিস্মিত করে গোললাইন থেকে বল ফেরান উনাই গার্সিয়া।
১৫ মিনিটে মেসির শট ব্লক করেন নাচো ভিদাল। তবে বল বার্সার দখলে ছিল, গ্রিয়েজমান বুক দিয়ে বল নামিয়ে ভলি শট নেন। তবে হেরেরা দুরন্ত গতিতে হাত দিয়ে তা ফিরিয়ে দেন। ২৭ মিনিটে ডান দিক থেকে বক্সের প্রান্তে কৌতিনিয়োকে পাস দেন মেসি। ডিফেন্ডারের চাপে কৌতিনিয়ো শট নিলে তা বাঁক খেয়ে গোলবারের ওপর দিয়ে যায়।
বার্সা এগিয়ে যায় দুই মিনিট পর। কৌতিনিয়ো ও মার্টিন ব্রাথওয়েটকে ডাবল সেভ করেছিলেন হেরেরা। কিন্তু বল ফিরে পেয়ে ফিরতি শটে ঠিকানা খুঁজে পান ব্রাথওয়েট। ৪০ মিনিটে বার্সার জালে বল জড়িয়েছিল ওসাসুনা। কিন্তু তাদের খেলোয়াড় সানহুর্হো অফসাইডে থাকায় গোল বাতিল হয়।
বিরতির তিন মিনিট আগে আলবার ক্রস মনকায়লো বিপদমুক্ত করলেও তার হেড গ্রিয়েজমানের কাছে পৌঁছায়। ফরাসি ফরোয়ার্ড ব্যবধান ২-০ করেন। ৫৭ মিনিরটে ব্রাথওয়েট ও গ্রিয়েজমানের সহায়তায় তৃতীয় গোল করেন কৌতিনিয়ো।
৬৮ মিনিটে বার্সার গোলপোস্টে বল আঘাত করলে ব্যবধান কমাতে পারেনি ওসাসুনা। পরের মিনিটে বার্সার হয়ে চতুর্থবার জালে বল জড়ান উসমান দেম্বেলে, কিন্তু ট্রিনকাও ছিলেন অফসাইডে। গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
ট্রিনকাও তার আক্ষেপের অবসান ঘটান মেসিকে দিয়ে গোল করিয়ে। ৭৩ মিনিটে বক্সের প্রান্তে বল পেয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। তারপর আবেগঘন এক উদযাপন। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় স্মরণ করলেন ফুটবল কিংবদন্তিকে।