বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করার হুমকি

:
: ৭ years ago

প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের’ উদ্যোগে এই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। এতে মহাজোটের অধীনে থাকা ১০টি সংগঠনের শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক এসেছেন এক দফা দাবি আদায়ের অনশন কর্মসূচিতে।

তথ্য অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে বেতন চান সহকারী শিক্ষকরা। কিন্তু তারা বেতন পাচ্ছেন তিন ধাপ নিচে।

আন্দোলনরত   শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)।

গতকালের কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে কোনো ঘোষণা না এলে বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও বই উত্সবে অংশ না নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তারা। শিক্ষকদের এই কর্মসূচির কারণে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

গতকাল সকালে মহাজোটের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষকরা। এরপর দুপুর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিক্ষকরা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হন। অনেকে কাফনের কাপড়ও পরে এসেছেন। গতকাল সন্ধ্যায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেশিরভাগ শিক্ষকই শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন। আজ রবিবারও এই কর্মসূচি চলবে বলে কর্মসূচি থেকে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, আমাদের একমাত্র দাবি প্রধান শিক্ষকের এক ধাপ নিচে আমরা বেতন চাই। এজন্য আমরা এর আগে নানা কর্মসূচি পালন করেছি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনাও করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরন অনশন শুরু করেছি।

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহীনুর আল-আমিন বলেন, দাবি আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়া গেলে আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

সহকারী শিক্ষক ফ্রন্টের সভাপতি ইউএস খালেদা আক্তার বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার। আমরা সংবাদ সম্মেলনে আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তা পূরণ করা হয়নি।

কর্মসূচিতে সহকারী শিক্ষক সমাজ, সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন, সহকারী শিক্ষক সমাজ-২, সরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক সমাজ-৩, সহকারী শিক্ষক সমিতি-২, সহকারী শিক্ষক ফোরাম, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন।