বাবা-ভাইকে হারিয়ে দিশেহারা রাসেল

লেখক:
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত বাবা সালাম মোল্লার (৭৫) চিকিৎসার জন্য শনিবার সকালে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হন রাসেল মোল্লা। সঙ্গে ছিল তাঁর বড় ভাই শাহিন মোল্লাও (৪০)। তবে রাসেল তাঁর বাবাকে আর বরিশাল নিয়ে যেতে পারেননি। পথেই তাঁদের বহনকারী বাসটি পুকুরে উল্টে পড়ে যায়। এতে আহত হয়ে রাসেল নিজে বেঁচে গেলেও হারিয়েছেন তাঁর বড় ভাই ও বাবাকে। বাবা ও বড় ভাইকে হারিয়ে রাসেল এখন দিশেহারা।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে রাখা লাশের সারি থেকে সালাম ও শাহিন মোল্লার মরদেহ শনাক্ত করেছেন স্বজনেরা। রাসেলদের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভার উত্তর পূর্ব ভান্ডারিয়া গ্রামে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ শনিবার সকালে বাসটি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কাছে পুকুরে পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিনজন শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন।

রাসেল মোল্লা বলেন, আমার বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বরিশালে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলাম। বাসচালকের পেছনের আসনে বসা ছিলাম। বাসচালক যাত্রার শুরু থেকেই গাড়িতে যাত্রী ওঠানোর জন্য বারবার সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলছিল। গাড়ি চালানোয় বাসচালকের মনোযোগ ছিল না।

দুর্ঘটনার জন্য চালককে দায়ী করে রাসেল মোল্লা বলেন, যদি চালককে হাতের কাছে পাইতাম, তবে নিজ হাতে তাঁর বিচার করতাম। তাঁর জন্য আমার বাবা চোখের সামনে প্রাণ হারাইছে। এ ঘটনায় চালকই একমাত্র দায়ী।

রাসেলের অভিযোগ করে বলেন, যাত্রী ওঠানোর জন্য শুরু থেকেই চালক মরিয়া হয়ে গেছিল। রাস্তায় চোখ না রেখে সুপারভাইজারকে বারবার যাত্রী ওঠানোর জন্য তাগাদা দিচ্ছিল। পাশাপাশি বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কাছে এসে গাড়িটি পুকুরের মধ্যে নামিয়ে দেয়। এ জন্যই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে। আমি তাঁর বিচার চাই।

ঝালকাঠি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গৌতম কুমার ঘোষ বলেন, পুলিশের রেকার দিয়ে বাসটি পুকুর থেকে তোলার পর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।