ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিতর্কিত অযোধ্যা মামলা নিয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মামলার অন্যতম পক্ষ উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। শনিবার অযোধ্যা মামলার রায়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রামলালার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিতে মন্দির নির্মাণ হবে এবং বিকল্প ৫ একর জমি দেয়া হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য।
রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ওয়াকফ বোর্ড বলছে, তারা একটি বৈঠক করবে এবং পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হবে কিনা, সেব্যপারে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী এই বোর্ডের আইনজীবী জাফারিয়াব জিলানি বলেন, আমরা মনে করি এটা অন্যায্য রায়…আমরা এই রায় মানতে পারছি না। আমরা রায়ের সব অংশের সমালোচনা করছি না।
বিতর্কিত জমি এবং ভেতরের অংশ অন্যপক্ষকে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে জাফারিয়াব জিলানি বলেন, পুরো জমি অন্যপক্ষকে দেয়া ঠিক নয়। আমরা শীর্ষ আদালতকে সম্মান জানাই, আমাদের রায়ের সঙ্গে সহমত না হওয়ার অধিকার আছে। অনেক মামলায় রায় পাল্টেছে দেশের শীর্ষ আদালত। আমাদের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর অধিকার আছে।
বিতর্কিত জমি মন্দিরের জন্য দেয়ার রায় ব্যাখা করে আদালত বলেছে, আর্কিওলজি সার্ভে অব ইন্ডিয়া প্রমাণ পেয়েছে যে, মোঘল সম্রাট বাবরের ১৬ শতকের মসজিদ ফাঁকা জায়গায় নির্মাণ করা হয়নি। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভেঙে দেন দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুরা। তাদের বিশ্বাস, হিন্দুদের দেবতা রামচন্দ্রের জম্মভূমির ওপর তৈরি করা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছেন, মুসলিমরা মসজিদ পরিত্যক্ত করে দেননি এবং তাদের নির্মাণ থেকে বঞ্ছিত করা যাবে না। হিন্দু মহাসভার আইনজীবী বরুণ কুমার সিংহ বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ের মধ্যে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে।’