বাচ্চাদের কিছু হলে মাঠে নামবেন অভিভাবকরা

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে বাচ্চাদের আন্দোলন যৌক্তিক। তাদের ওপর আক্রমণ করা হলে ঘরে বসে থাকব না। মুখে দাবি মানার কথা বললে হবে না। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর বৃহস্পতিবার বিকেলে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের সনি সিনেমা হলের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অভিভাবকরা এসব কথা বলেন। কর্মসূচিতে অংশ নেন মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯৫ ব্যাচের শতাধিক অভিভাবক।

মানববন্ধনে অভিভাবক শামীম আরা নিপা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মিরপুরে তাদের সন্তানদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে তারা শঙ্কিত। আর কোনো বাচ্চার ওপর আঘাত এলে তারা ঘরে বসে থাকবেন না। এর আগে সরকার অনেক দাবি পূরণের কথা বলে ঝুলিয়ে রেখেছে। নয় দফা দাবি মেনে জরুরি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।’

এদিকে, সকালে লিও ক্লাব অব ঢাকা ফ্লাওয়ার গার্ডেনের উপদেষ্টা খাদিজা বিনতে মনির তিয়াশার নেতৃত্বে প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় ৫০ তরুণ মানববন্ধন করেন। নিরাপদ সড়কের দাবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা এ মানববন্ধনে অংশ নেন।

তিয়াশা জানান, তিনি দুই সন্তানের মা। যারা যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছে, তারাও তার বাচ্চার সমতুল্য। তারা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাস্তায় নামেনি। অথচ বৃহস্পতিবার তাদের নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। এমনকি আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে ছাত্রীদের মারধর করা হয়েছে। অথচ মেয়েরা মায়ের সমান। তাই কোমলমতি কোনো শিশুর গায়ে আরেকবার হাত তুললে মাঠে নামার ঘোষণা দেন তিনি।

এ সময় এভারগ্রিন জুম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এসটি শাহীন বলেন, আমাদের ভাইবোনের নিরাপত্তাসহ সড়ক ব্যবস্থা শৃঙ্খলার আওতায় আনার জন্য আমরা আন্দোলনে নেমেছি।

ছোট ছোট বাচ্চাদের নয় দফা দাবি পূরণে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সেভ দ্য রোডের সমাবেশে অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি পূরণ না হলে সাধারণ মানুষও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। কেননা, প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচ হাজার স্বজন-প্রিয়জন-একমাত্র অবলম্বন হারাচ্ছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সেভ দ্য রোডের চেয়ারম্যান জেডএম কামরুল আনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রতিবেদন পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শান্তা ফারজানা।

এ সময় আয়োজক সংগঠনের নেতারা শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবির পাশাপাশি নিজেরাও সাত দফা দাবি জানান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- মিরেরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘নিরাপদ পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে, ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে, সড়কপথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতীত চালক-সহযোগী নিয়োগ ও হেলপার দিয়ে পরিবহন চালানো বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, স্থল-নৌ-রেল ও আকাশপথ দুর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ সরকারিভাবে দিতে হবে, ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করতে হবে ইত্যাদি।