বাংলায় কথা বলে চমকে দিলেন প্রিয়াঙ্কা

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

রোহিঙ্গাদের ভাষা বাংলা না হলেও তারা যে বাংলা ভাষা বোঝেন, সেটা ভালো করেই জানতেন বলিউড অভিনেত্রী ও ইউসিফের শুভেচ্ছা দূত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া! আর তাই নিজে বাংলায় কথা বলে সবাইকে চমকে দিলেন তিনি।

সোমবার বিকেলে টেকনাফের শামলাপুর অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে বাংলায় কথা বলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এ সময় তার পরনে ছিল জিনসের প্যান্ট, ইউনিসেফের টি-শার্ট আর মাথায় স্কার্ফ।

এর আগে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সকড় পথে গাড়ীযোগে টেকনাফ শামলাপুর ইউনিসেফ পরিচালিত একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন তিনি। পরে সেখান থেকে পাঁচ মিনিট হেঁটে বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে শামলাপুর অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবিরে পৌঁছান সাবেক এই বিশ্ব সুন্দরী।

সেখানে প্রথমে তিনি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে শামলাপুর শিবিরের আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা শিশুকে ডেকে জড়িয়ে ধরেন। পরে তাকে জিজ্ঞেস করেন তোমার নাম কি? কেমন আছো তুমি?

জবাবে শিশুটি জানায়, তার নাম মো. রফিক। তারা ভাল নেই, এখানে তাদের খুব কষ্ট হয়।

এ সময় আরও ১০-১৫ শিশুকে ডেকে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তাদের কাছে জানতে চান, তারা পড়াশোনা করে কি না। ঠিকমত খাবার খায় কিনা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে কিনা। বাবা মায়ের নাম এবং মিয়ানমারের বাড়ি কোথায়? এক পর্যায়ে শিবির থেকে রাস্তায় উঠে তাদের সঙ্গে দৌড়ান এবং সেলফি তোলেন প্রিয়াঙ্কা। প্রায় ২০ মিনিট রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান এবং যাওয়ার সময় তিনি তাদেরকে (ফির মিলেঙ্গে) আবার দেখা হবে বলে জানান।

শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা আবদুল আজিজ জানান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে একনজর দেখার জন্য অনেক মানুষ ভিড় করেছিলেন। এ সময় রোহিঙ্গাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, পুলিশ বাহিনীকে সেই অনুরোধ জানান এই অভিনেত্রী। এ সময় তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটালেও কোনো রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেননি। শিবির পরিদর্শন শেষে সাড়ে চারটার দিকে ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

 

এর আগে দুপুরে প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে নিয়ে যাওয়া হয় ইউনিসেফ পরিচালিত হাসপাতালে। এ সময় হাসপাতালের ভেতরে বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভেতরে ডাক্তারদের সঙ্গে ১৫ মিনিট কথা বলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ পরির্দশক রাজু আহমেদ ও কাঞ্চন কান্তি দাশ এবং ইউনিসেফের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে হাসপাতালের ইনচার্জ রিয়াজুল ইবনে হক বলেন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানতে চেয়েছেন রোহিঙ্গা শিশুরা কোন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং ডায়রিয়া কেন হচ্ছে? তিনি শিশুদের সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রোহিঙ্গা নারী আমেনা খাতুন বলেন, একজন অভিনেত্রী শিবির পরিদর্শন করতে আসলেও কোনো রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেননি। ভেবেছিলাম দুঃখের কথাগুলো ভালো করে তার কাছে বর্ণনা করবো।

জানা গেছে, আাগামীকাল মঙ্গলবার সকালে তিনি উখিয়ার বালুখালী ও জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। এরপর বিকেলে টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি। বুধবার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন এই বলিউড তারকা।