#

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িয়ে মানহানির অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)।

তিন বছর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও চাঞ্চল্যকর সাইবার হ্যাংকিয়ে চুরি যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফেরত দিতে আরসিবিসিকে চাপ দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। অর্থ ফেরত পেতে গত ১ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের আদালতে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে মামলাও করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম  বলেন, আরসিবিসির মানহানি মামলার খবর তিনি বিদেশি গণমাধ্যম থেকে জেনেছেন। বিস্তারিত না জেনে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। ফিলিপাইন সফররত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি দল ফিরলে তখন জানানো হবে।

সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ আদায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউর (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গত ১০ মার্চ ম্যানিলায় যায়। আরসিবিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মানহানি মামলার নোটিশ রাজী হাসানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের ফিলিপাইন ত্যাগ করার কথা।

গত ৬ মার্চ ফিলিপাইনের বিচারিক আদালত মাকাতি সিটি রিজিওনাল কোর্টে (আরটিসি) দায়ের করা মামলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয়েছে। মামলায় ব্যাংকটি তাদের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বার বার ‘অশুভ আক্রমণ’ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংকের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে হ্যাকাররা। পরে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ ব্যাংকটির জুপিটার স্ট্রিট শাখার মাধ্যমে মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম প্রতিষ্ঠান হয়ে তিনটি ক্যাসিনো ও বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে চলে যায়।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরটিসির বিচারক ওই শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে দোষী সাব্যস্ত করে জানুয়ারিতে ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড এবং বড় অঙ্কের জরিমানার আদেশ দেন।

তিন বছর আগে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করা রিজার্ভ চুরির এ অর্থ মাকাতি শহরে আরসিবিসির জুপিটার স্ট্রিট শাখার মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তার হদিস এখনও মেলেনি।

স্থানান্তরিত এসব অর্থের মধ্যে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং দুই দফায় দেড় কোটি ডলার ফেরত দিয়েছেন। এ ক্যাসিনো ব্যবসায়ী দেগুইতোর সাবেক কর্মস্থল ইস্ট ওয়েস্ট ব্যাংকিং করপোরেশনেও তার গ্রাহক ছিলেন।

অন্যদিকে অর্থ স্থানান্তর নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে ফিলিপাইনের সিনেট কমিটি তদন্ত শুরু করে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা পাচার ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় আরসিবিসিকে এক কোটি ৯১ লাখ ডলার জরিমানা করেছিল। রয়টার্স ও এনকোয়ারার ডটকম।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন