বাংলাদেশে সেই অভব্য আচরণ করেও অনুতপ্ত নন হারমানপ্রীত

:
: ১১ মাস আগে

বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে এসে ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের অভ‌ব‌্য আচরণের কথা ভুলবার নয় কারও। কড়া সমালোচনা, আইসিসির শাস্তি সবকিছুই পেয়েছিলেন হারমানপ্রীত। কিন্তু নিজের সেই আচরণে একদমই অনুতপ্ত নন তিনি। সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ‌্যম দ‌্য ক্রিকেট পেপারে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হারমানপ্রীত সোজাসাপ্টা জানিয়েছেন, মাঠে যা হয়েছে সেটা একদমই ঠিক ছিল। ভুল কিছু করেননি। শাস্তি নিয়েও উদ্বিগ্ন নন তিনি।

 

তিন ম‌্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশে এসেছিল ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পয়েন্ট প্রক্রিয়া যুক্ত থাকায় দুই দলের জন‌্য সিরিজগুলো ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ। মাঠের ক্রিকেটে তাই কেউ কাউকে দেয়নি ছাড়। টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব‌্যবধানে ভারত জিতে নিলেও ওয়ানডে সিরিজ ১-১ ব‌্যবধানে সমতা থাকে। সিরিজের শেষ ম‌্যাচ টাই হওয়ায় সিরিজ ড্র হয়।

 

 

মিরপুরে শেষ ওয়ানডেতে ঘটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত নিজের আউটের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে ক্রিজে স্টাম্প ভাঙেন। পরবর্তীতে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলেন। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে দর্শক ও চতুর্থ আম্পায়ারকে থাম্বসআপ দেখান।

সেখানেই ক্ষান্ত হননি হারমানপ্রীত। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে আম্পায়ারদের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘আমি মনে করি অনেক কিছু শেখার ছিল এই ম্যাচ থেকে। ক্রিকেট ছাড়াও! যে মানের আম্পায়ারিং হয়েছে তাতে আমরা খুবই বিস্মিত। কিন্তু…আমরা সামনে যখন বাংলাদেশে আসবো নিশ্চিত করে আসতে হবে, এ ধরণের আম্পায়ারিংয়ের মুখোমুখি হতে হবে। প্যাথেটিক আম্পায়ারিং। আমরা আম্পায়ারের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে খুবই হতাশ।’

 

এরপর নিয়ম অনুযায়ী অফিসিয়াল ফটোসেশনে এসে আরও বাজে ব্যবহার করেন হারমানপ্রীত। সেখানে বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোমরা এখানে একা কেন? তোমরা তো ম্যাচ টাই করোনি। আম্পায়াররা তোমাদের কাজ করে দিয়েছি। তাদেরকেও ডাকো। আমরা তাদেরকে নিয়েও তোমাদের সঙ্গে পূর্ণ একটা ছবিতে অংশ নেই।’

ভারতের অধিনায়কের কাছ থেকে এমন অপ্রীতিকর আচরণ এবং অসৌজন্যমূলক কথা শোনায় বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি তাৎক্ষণিক ট্রফি ও উইনার বোর্ড রেখে মঞ্চ ত্যাগ করেন। তখনও ট্রফি নিয়ে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের ছবি তোলা বাকি ছিল। কিন্তু সেসবের থোরাই কেয়ার না করে জ্যোতিরা সবাই ফিরে যান ড্রেসিংরুমে।

 

 

হারমানপ্রীতের এমন অসৌজনমূলক আচরণে রীতিমত অবাক হন জ্যোতিরা। ভারতকে প্রথমবার ওয়ানডেতে হারানো, সিরিজ ড্র করার আনন্দ ছিল তাদের চোখেমুখে। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় সিরিজের শেষটা যেভাবে হলো তা রীতিমত অসম্মানজনক বলেই মনে করছে বাংলাদেশ। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও হারমানপ্রীত এই ঘটনা নিয়েও মোটেও চিন্তিত নন। অথচ এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো নারীকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয় আইসিসি (দুই ম‌্যাচ নিষিদ্ধ ও ম‌্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ জরিমানা)।

ব্রিটিশ বাংলাদেশি সাংবাদিক তৌহিদ কোরেশীকে হারমানপ্রীত বলেন, ‘আমি বলব না কোন কিছু নিয়ে আমি অনুতপ্ত। কারণ, দিনশেষে খেলোয়াড় হিসেবে আপনি চাইবেন যেন ন্যায্য জিনিস হয়। একজন খেলোয়াড় হিসেবে সব সময়ই আপনার অধিকার আছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার। আমি মনে করি না কোন ব্যক্তি বা খেলোয়াড়কে আমি ভুল কিছু বলেছি। আমি শুধু মাঠে কি হয়েছে সেসব বলেছি। আমি কোন কিছু নিয়ে অনুতপ্ত নই।’

 

অনুতপ্ত না হলেও আইসিসির শুনানিতে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলেন হারমানপ্রীত।