দারিদ্র্য নিরসন ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ কীভাবে কাজ করছে, তা সরেজমিনে দেখতে দেশে আসছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শাফার। সপ্তাহব্যাপী সফরের অংশ হিসেবে রোববার বিকেলে তিনি ঢাকা পৌঁছাবেন বলে বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এ সফর বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে দীর্ঘকালীন অংশীদারিত্ব সম্পর্ক আরও গভীর করবে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে কীভাবে সাহায্য করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা করবেন তিনি।
ওয়াশিংটনভিত্তিক বৈশ্বিক ঋণ সংস্থাটি জানায়, ‘চলতি বছরের ১ জুলাই দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি শাফারের প্রথম বাংলাদেশ সফর।’
বাংলাদেশ সফর নিয়ে এক বিবৃতিতে হার্টউইগ শাফার বলেন, ‘খুব কম সময়ের মধ্যে চরম দারিদ্র্য অর্ধেক কাটিয়ে উঠতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। অন্য দেশ বাংলাদেশের উন্নয়নের উদ্ভাবন ও সাফল্য থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিজেদের নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মহান উদারতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গারা নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত তাদের চাহিদা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে এই সংকট মোকাবেলায় দেশটির ক্ষমতা তৈরি করতেও সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশ সফরকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন শাফার। তিনি সেখানকার স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন। এ ছাড়াও অর্থমন্ত্রী, পানিসম্পদমন্ত্রী, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন।
‘দক্ষিণ এশিয়ার হটস্পট : তাপমাত্রার প্রভাব এবং জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন’বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের নতুন একটি প্রতিবেদনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন শাফার। তিনি বিশ্বব্যাংক সমর্থিত একটি প্রকল্প ঘুরে দেখবেন, যা ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করেছে।
দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে যোগ দেওয়ার আগে শাফার গ্লোবাল থিমের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অপারেশন্স পলিসি অ্যান্ড কান্ট্রি সার্ভিসেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই কর্মকর্তা বিশ্বব্যাংকের ক্রয়, পরিবেশগত ও সামাজিক সুরক্ষা এবং ব্যাংকের ঋণদান সম্পর্কিত নতুন নীতিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের নেতৃত্ব দেন। এর আগে তিনি জিবুতি, মিসর ও ইয়েমেনে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য অনুদান হিসেবে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত সহায়তার ব্যবস্থা করেছে বিশ্বব্যাংক। ব্যাংকটি রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাদানের জন্য প্রায় ৭৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে।