রিপন হাওলাদার,এইচ আর হীরা ॥ ঋতুরাজ বসন্তের আগেই দক্ষিণ অঞ্চলে আমের মুকুল জানান দিচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তা। দেরিতে হলেও শীতল বাতাসে এখন আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে যাচ্ছে আমগুলো।
শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জে সর্বত্র আম গাছগুলো তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে চলেছে এক অপরূপ সাজে। সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশাল নগরী থেকে শুরু করে সব বরিশাল সদর উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে যাচ্ছে গাছের প্রতিটি ডালপালা।
চারদিকে ছড়াচ্ছে মুকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ। তবে এবারো আমের ফলন নির্ভর করছে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন এই জেলার বাসিন্দারা। আম বলতে এক সময় উত্তরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীকেই বোঝাতো। কিন্তু বর্তমানে বরিশাল দক্ষিণ অঞ্চলে ছোট-বড় বহু আমবাগান রয়েছে।
এ বিষয় বরিশাল জেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হরিদাস শিকারী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলে আমের মুকুল দেরিতে এসেছে।
তবে আমের মুকুল আসার আগে-পরে যে আবহাওয়ার প্রয়োজন, এখানো তা বিরাজমান রয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়।
এসময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। গাছে নতুন পাতা না আসা পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফ‚টিত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। কিছু গাছের মুকুলে পাথরদানা দেখা গেলেও এতে ক্ষতির কিছু নেই। এবার গাছে যতটুকু মুকুল এসেছে পাথরদানার কারণে আমের ফলন তেমন ব্যাহত হবে না।
ছবিটি বরিশাল নগরীর বগুড়া রোড থেকে তুলেছেন শাওন হাওলাদার
জানা যায়, আমের ফলন বাড়াতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। সংশ্লিষ্টরা একটু সতর্ক হলেই শতভাগ ফলন পাওয়া সম্ভব। সাধারণত আমের মুকুল আসার পর হোপার পোকার আক্রমণ ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগ হয়ে থাকে। এজন্য আমের গুটি মটর দানার মতো হওয়ার পর দুইবার গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে অনেককে পরামর্শ দেয়া হয়।
প্রতি লিটার পানিতে মেশাতে হবে ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের তরল কীটনাশক ০.২৫ গ্রাম। আর দানাদার কীটনাশক হলে ০.২ গ্রাম। এর সাথে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ০.২ গ্রাম। এই নিয়মে আম গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে আম গাছ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে এবং ভালো ফলন হবে।
নগরীর গোরস্তান রোড এলাকার সবুজ রুবেল সহ কয়েক ব্যক্তি জানান, বাড়ির আশপাশে বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে।
গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরো কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে তিনি জানান। তারা আরো জানান, মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুক‚লে না থাকায় অনেক পরে মুকুল দেখা গেছে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মানুষের চোখে ভাসছে স্বপ্ন।
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর পরিমানে আম গাছে মুকুল ধরেছে। এর মধ্যে বরিশাল নগরীর বগুড়া রোডস্থ সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার সামনের গাছটি দেখলেই বুঝা যায় যে বসন্ত এসে পড়েছে। শুধু ওখানেই নয় এভাবে বরিশাল নগরীর কর ভবনের সামনেসহ অধিকাংশ আম গাছেই মুকুল ধরেছে।
এছাড়া বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার প্রতিনিধিদের তথ্যমতে জানা যায়, কিছু কিছু এলাকায় আম মুকুলে ডেকে যাচ্ছে ডালপালা, প্রায় বিগত বছরগুলোতে যে সব আমগাছে ফলন হতো, তা অধিকংশ গাছে মুকুলের দেখা মিলছে না। তবে তারা জানান, আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে দুই এক সপ্তাহের মধ্যে আম মুকুল আসবে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com