বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম-বিপিএম(বার) বলেছেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্র ডিজিটালাইজেশন করছে। এটুআই কার্যক্রমের আওতায় আমরা ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম” বা ডিজিটিাল প্রযুক্তি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের এ পদ্বতি চালু করছি। গোটা দেশে তৃতীয় নাম্বারে আর বরিশাল বিভাগে আমরাই প্রথম এ কার্যক্রম চালু করেছি।
রোববার (৪ আগষ্ট) বরিশাল বিভাগে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া “ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম” কার্যক্রম এর উদ্বোধন, সহায়তা প্রদানকারী কোম্পানির সাথে চুক্তি সাক্ষর ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ডিআইজি আরো বলেন, যে কোন কিছুর দীর্ঘসূত্রতা মানুষকে নিরুৎসাহিত করে। তাই আমরা চাই দ্রুততম সময়ে মানুষকে সেবা দিতে। আর স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে পুলিশী কার্যক্রম চললে মানুষের বিড়াম্বনা কমবে।
তিনি বলেন, এরমধ্য দিয়ে জনসাধারণকে দ্রুত সময়ের মাধ্যমে সেবা যেমন প্রদান করা যাবে। যানবাহন চালক বা মালিকদের আর মামলার কাগজ নিয়ে বিড়াম্বনায় পড়তে হবে না। এখন থেকে তারা স্বচ্ছভাবে কি মামলা হচ্ছে, কতোটাকা জরিমানা হচ্ছে তা যেমন দেখতে পারবেন, আবার দ্রুতসময়ে ইউক্যাশের মাধ্যমে দেশের যে কোন জায়গা থেকে মামলার জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে নিষ্পত্তি করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম-বিপিএম(বার) সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আগে থেকেই ট্রাফিক আইনের মামলার সকল টাকা সরকারি কোষাগারে যেতো। তবে মানুষের মাঝে এ নিয়ে সন্দেহ ছিলো। পজ মেশিনের মাধ্যমে মামলার ফলে আশাকরি এখন বিষয়টি নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না কারো। এটি যেমন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, তেমনি ভোগান্তি কমাবে। আগে যেমন ব্যাংকে যাও লাইনে দাড়াও, ট্রাফিক অফিসে যাও লাইনে দাড়াও তার আর কোন ঝামেলা থাকবে না।
জেলাপুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, “ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম” নামক প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রাথমিকভাবে ২৫ টি পজ মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে এবং উদ্বোধনের আগে জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ৪০ জন সদস্যকে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। আর ইউসিবিএল ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ইউক্যাশ থেকে জরিমানার টাকা পরিশোধ করা যাবে। পাশাপাশি গ্রামীন ফোন পজ মেশিনের নেটওয়ার্ক সাপোর্ট দিবে।
ইউসিবিএল ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ইউক্যাশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বরিশাল মহানগরের ৫৩ টিসহ গোটা জেলায় ১৭৫ টি পয়েন্টে তাদের এজেন্টদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেখান থেকেই যানবাহন চালক ও মালিকরা জরিমানার টাক পরিশোধের সুযোগ পাবে। উল্লেখ্য বরিশাল জেলা ট্রাফিক পুলিশ গত অর্থবছরে বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ম্যানুয়াল ও সনাতন পদ্ধতিতে ১৬ হাজার ৭৬৩টি মামলা করে ১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ৫ শত টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করেন এবং চলতি অর্থবছরের গেলো ১ মাসে ম্যানুয়াল ও সনাতন পদ্ধতিতে ১ হাজার ৬৭৩টি মামলা করে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকার এ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান এ্যানালিষ্ট মোঃ হামিদুল ইসলামসহ বরিশাল জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের আগে ইউসিবিএল ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ইউক্যাশ কর্তৃপক্ ‘র সাথে ও গ্রামীনফোন কর্তৃপক্ষের সাথে জেলা পুলিশের চুক্তি সাক্ষর হয়। পরে জেলা পুলিশ লাইন্সে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম-বিপিএম(বার)।