বরিশাল-৩ আসনটি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা, দুই টিপুকে নিয়ে বিপাকে মহাজোট

:
: ৬ years ago

অনলাইন ডেস্ক// বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসন নিয়ে মহাজোটের দুই শরিক দল জাতীয় পার্টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টির মধ্যে চলছে দড়ি টানাটানি। ওই আসনে নিজেকে শরিক দলের মনোনীত প্রার্থী দাবি করে দুই দলের দুই নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর এ নিয়ে বেশ বিপাকে রয়েছে মহাজোট। মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় পার্টি এবং ওয়ার্কার্স পাটির এই দ্বন্দ্ব কোনোভাবে সামাল দিতে না পারায় আসনটি শেষ পর্যন্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছে মহাজোট। তবে আসনটি যাতে হাতছাড়া না হয় এ জন্য জোটের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

মহাজোট সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীরা জানান, গত নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহায়তায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুকে ১২ হাজার ১৯৫ ভোটে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. টিপু সুলতান। মহাজোটের মনোনয়নের আশায় এবারও ওই আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির ব্যানারে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। তার দাবি, দলের সভাপতি রাশেদ খান মেনন তাকে (টিপু সুলতান) মহাজোটের মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রী মেননকে মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কারনে তিনিই মহাজোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়াই করবেন।

এদিকে গত ২৮ নভেম্বর জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু আসনটি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন। এখন মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তিনি। জোটের মনোনয়ন না পেলেও লাঙল প্রতীক নিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন গোলাম কিবরিয়া টিপু।

তবে মহাজোটের শরিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, ওয়াকার্স পার্টি ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থীর মধ্যে দড়ি টানাটানি চললে বিএনপি প্রার্থী আইনজীবী জয়নুল আবেদিন সহজেই নির্বাচনি বৈতরণী পাড় হয়ে যাবেন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মহাজোটের প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর কাছে মাত্র ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমান। ওই নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মাঠে থাকায় হারতে হয় তাকে। কারণ বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়নুল ১৭ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ আসনে তিনবার এমপি নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী মোশারেফ হোসেন মঙ্গু। তবে বিএনপি নেতৃবৃন্দের দাবি একক প্রার্থী থাকলে এ বছর আসনটি উদ্ধার করা তাদের পক্ষে সম্ভব হবে। আর মহাজোটে দ্বন্দ্ব থাকলে তাতে বিএনপি প্রার্থীর বিজয় আরো সহজ হবে।

মহাজোটে প্রার্থীদের মনোনয়ন দ্বন্দ্বের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, আশা করছি মহাজোটের সিদ্ধান্ত মেনে দুই দলের মধ্যে শেষ পর্যন্ত একজন প্রার্থী মাঠে থাকবেন। গত নির্বাচনে জাপা এবং ওয়ার্কার্স পার্টি কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ায় আসনটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে এবারে পরিস্থিতি ভিন্ন। দুই প্রার্থীর দ্বন্দ্বের কারণে ওই আসনে ভোটের মাঠে অবশ্যই প্রভাব পড়বে এবং বিরোধীরা সেই ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।

বরিশাল-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেননি আওয়ামী লীগের কোনও প্রার্থী। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৮জন।