বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশ ঘরে স্ত্রীর লাশের পাশে তিন বছরের কন্যা শিশুকে ফেলে পালিয়েছেন স্বামী মো. রফিকুল ইসলাম। স্বামী ও তার পূর্বের স্ত্রীসহ পরিবারের অত্যাচারে গৃহবধূ রোজী আক্তারের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। এই ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।
নিহত রোজীর ছোট বোন রিমা আক্তার ও ভাই রাজু মোল্লা বলেন, ‘আমাদের বোন রোজীর সাথে গত চার বছর পূর্বে সৌদি প্রবাসী ও উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট এলাকার মৃত আব্দুল হক মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। তবে রফিকের ১ম স্ত্রী দোলনা বেগমের সাথে ডির্ভোস হওয়ার পর রফিক রোজীকে বিয়ে করে। তাদের সংসারে একটি তিন বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ঈদের পর দেশে ফেরেন রফিক। কিন্তু সাবেক স্ত্রীর দোলনা, দোলনার ভাই জালাল, রফিকের ভাই সফিক ও শহিদুলের ষড়যন্ত্রে দেশে ফেরার তিন দিনের মাথায় সে আবারো দোলনাকে হিল্লা বিয়ে করেন। এরপর একই ঘরে দুই বউ নিয়ে থাকেন রফিক। এ নিয়ে প্রতিদিনই ঝগড়া ও মারামারি হতো।
মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে রোজীর ভাই রাজুকে রফিক ফোন করে বলে রোজী অসুস্থ। রাতেই রাজু ও বোন রিমা উজিরপুরে যায়। পরে ফোনের মাধ্যমে জানতে পারে রোজীকে বরিশাল মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজু ও রিমা মেডিকেলে এসে দেখেন লাশ ঘরের সামনে ভাগ্নি কান্না করছে। আর লাশ ঘরের মধ্যে রোজীর লাশ পরে আছে। আর কেউ নেই। লাশ ফেলে পালিয়েছে। রোজীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যা সাজানোর জন্য জোর করে রোজীর মুখে বিষ ঢালা হয়েছে। পরে ৯৯৯ এ কল করে অভিযোগ করলে পুলিশ সুরতহাল করে লাশ ময়নাতদন্ত করেছে। ভোরে রোজীর লাশ তার বাবার বাড়ি একই উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের ভবানিপুর গ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় রোজীর বাবার বাড়ির স্বজনরা রফিক, সফিক, শহিদুল, দোলনা ও দোলনার ভাই জালালের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছে।
রোজীর ভাই রাজু মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, আমার দুলাভাই দেশে আসার পর থেকে কয়েকবার আমার বোনকে নিয়ে যেতে বলেছে। নতুবা তাকে মেরে ফেলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এ ঘটনায় বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে।
এই বিষয়ে উজিরপুর থানার ওসি শিশির কুমার পাল বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। থানায় অভিযোগ করলে আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।