বরিশাল সিটি নির্বাচন: কে হবেন নৌকার মাঝি

:
: ৬ years ago
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)

এম.এস.আই লিমনঃ  বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) নির্বাচন হতে এখনো কয়েক মাস বাকি। এরই মধ্যে নগরজুড়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা।তাছাড়া সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দরা নিজেদের ইমেইজ প্রকাশ্য করার বড় ধরনের সুযোগ হিসেবে আজকের দিনকে বেছে নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বরিশাল সফরে আসছেন প্রধান মন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধান অতিথি হিসেবে জনগনের উদ্যেশ্য করে জনসমাবেশে ভাষন দিবেন প্রধান মন্ত্রী বেলা ৩ টায়।ফলে জনসমাবেশে সম্ভাব্য সকল প্রার্থীরা নিজেদের ফুটিয়ে তুলতে নানা রকমের প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছে সর্বস্ব শ্রম দিয়ে। এদের মধ্যে কেউ হাত তুলে ধরে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন, কেউ আবার বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল করে এসে সভা-সমাবেশ করছেন। আবার কেউ হয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের ঘোষিত প্রার্থীর বিদ্রোহী। সুবিধাজনক অবস্থায় থাকায় দলীয় মনোনয়ন না পেলেও বা দলে নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন কেউ কেউ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নে বদলে যাওয়া গোটা দেশের ন্যায় বরিশাল সিটি’র উন্নয়নের ছোয়া তুলমূলক ভাবেই কম হওয়াতে বিএনপি সমর্থিত মেয়র ক্ষমতায় থাকার ফলে, বরিশাল সিটিতে এবার নানা কারণে শাসকদল আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে বেড়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র জনপ্রতিনিধি মেয়র প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাই এবার বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ফসল ঘরে তুলতে গেলে চাই নৌকার যোগ্য মাঝি। যা নিয়ে বেশ ভাবনায় আছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। যদিও এরই মধ্যে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের এক ডজনের বেশি নেতা গণসংযোগ শুরু করেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা কে কতো ভোট পাবেন তা নিয়েও চলছে ক্যালকুলেশন। দলীয় ভোট, ব্যক্তিগত ভোটের হিসাবের সাথে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় আলোচনায় আসছে। আবার কেউ কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়াকে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বিএনপি’র প্রার্থী চূড়ান্তের সিদ্ধান্ত নিয়েও অনেকেই সন্দিহান রয়েছে।

এদিকে বিসিসি’র ভোটযুদ্ধে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র প্রার্থী ছাড়া অন্য কারো হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় প্রার্থীতা চূড়ান্তে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকেই তাকিয়ে আছেন নৌকার বৈঠা ধরতে মরিয়া মাঝিরা।বরিশালে সংগঠনের স্বার্থে ত্যাগ-অবদানের শীর্ষক স্থানে থাকা আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খাঁন মামুন দলীয় সভানেত্রীর গ্রিন-সিগন্যাল পেয়েই মাঠে নেমেছেন বলে দাবি করেছেন সমর্থক নেতাকর্মীরা।শিক্ষিত নীতি আদর্শবান ত্যাগী দলের দুঃসময়ে অবদান রাখা ব্যক্তিকে প্রধান মন্ত্রী দলীয় সভানেত্রী অবশ্যই মূল্যায়ন করবেন বলে কেন্দ্রীয় নেতার সাথে আলোচনায় বলেন। তাছাড়া দলমত নির্বিশেষে জনপ্রিয়তার জনরায়কে প্রাধান্য দেয়া হবে দলীয় মনোনয়ন দেবার বিষয়ে।

এছাড়া আওয়ামী লীগের বেশ কয়েক নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, তারা কোনো গ্রিন-সিগন্যাল পাননি। তবে সিগন্যালের অপেক্ষায় না থেকে সংগঠনের স্বার্থে মাঠ গোছাতে শুরু করেছেন তারা। আর এদিকে বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামাল বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় একাধীক নেতৃবৃন্দ।যদিও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। মাহমুদুল হক খাঁন মামুন এখন জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে অবদান রাখছেন।কেন্দ্রীয় শীর্ষক নেতৃবৃন্দদের সাথে সক্ষতা রয়েছে তার চরম পর্যায়ে। এবার দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে সবাই দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ বলে ঘোষণা করেছেন স্থানীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দরা।সংসদ সদস্য বরিশাল জেলা আঃলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ এমপি’র বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্ দলীয় মনোনয়নের জন্য মাঠ গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমে পড়েছেন। এর প্রেক্ষিতে দলীয় কোন নেতৃবৃন্দরা প্রকাশ্য হয়ে প্রার্থী হতে পারছেন না।দলের আরেক নেতা কর্নেল (অবঃ)জাহিদ ফারুক শামীমও চেষ্টা করছেন মাঝি হয়ে ভিড়বেন নৌকার ছায়াতলে। তাই শীর্ষক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে বেশ সখ্যতা গড়ছেন ইতোমধ্যে।এ কারণেই প্রার্থী নিয়ে সবচেয়ে সমস্যা আওয়ামী লীগে।

বরাবরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের নজরে আসতে অনেকই তোড়জোড় শুরু করেছেন। মনোনয়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় শীর্ষক নেতৃবৃন্দদের আলোচনায় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল(অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মাহমুদুল হক খাঁন মামুন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজালুল করীম, এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ র ছেলে মহানগর আঃলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্’র নাম রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সিরিয়ালে। তবে সবকিছু বাদ দিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী আঃলীগের সিনিয়র অন্যতম নেতা মাহমুদুল হক খাঁন মামুন মনোনয়ন পেয়ে গেলে সবাই অবাক হলেও হতে পারেন। কারণ গত নির্বাচনের সময় থেকেই তার নামটা আলোচনায় আছে। তবে নৌকার টিকেট বা মনোনয়ন কে পাচ্ছেন আর কে পাচ্ছেন না, তা জানতে অপেক্ষাসহ কান রাখতে হবে কেন্দ্রীয় বার্তার দিকেই।অপরদিকে আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী’র জনসমাবেশ স্থলে জনসম্মুখে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ঘোষনা করার গুঞ্জন উঠলেও কোন ধরনের নিশ্চিত এমন তথ্যের সূত্র পাওয়া যায় নি এখন পর্যন্ত।