বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রাধান্য পাচ্ছে ডিজিটাল প্রচারনা

:
: ৬ years ago

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২৫ ভাগ ভোটারেরই বয়স হচ্ছে ২৩ বছরের নিচে। অর্থাৎ ২৫ ভাগ ভোটারই হচ্ছে তরুণ।

এছাড়া প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার বৃদ্ধিতে বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সের অধিকাংশ মানুষই এখন ডিজিটাল মাধ্যমে যুক্ত। ফলে প্রায় ৮০ হাজার ভোটারের বরিশাল সিটি নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্ক গড়ে উঠছে ডিজিটাল মাধ্যমে।

অনেক ক্ষেত্রেই একটা নির্বাচনী সভার চেয়ে ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসের বার্তা বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই ডিজিটাল মাধ্যমকে যারা অবহেলা করবে নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে পড়বে তারা।

সম্প্রতি আমেরিকা ও ভারতের নির্বাচনেও ডিজিটাল প্রচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি নির্ভর জীবন যাত্রায় অভ্যস্ত বিশাল জনগোষ্ঠির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সহজ পন্থা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৃণমূলে ছড়িয়ে থাকা সাধারণ জনগণের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় করে তোলার জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেই তাদের সকল কর্মকান্ডের তথ্য তুলে ধরতে হয় ফেসবুক, গুগল প্লাস ও টুইটার এ্যাকাউন্টে।

আর এ ইস্যুটির আবশ্যকতা উপলব্ধি করে বর্তমানে সিটি নির্বাচনে পার্থীদের একাধিক তরুণ নেতা তৃণমূলে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কেউ কেউ যুক্ত হয়েছেন ইউটিউব চ্যানেলে।

এসব চ্যানেলে সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের ভিডিও ছাড়াও আপলোড করা হচ্ছে বিশেষ তথ্য বা প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি)। ডিজিটাল প্রচারের ক্ষেত্রে বিসিসি নির্বাচনে ফেসবুক লাইভ বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। রাজনৈতিক দলসহ নেতাকর্মীরা নিজেদেরকে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ফেসবুকের বিশেষ এই ফিচার ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। বিশেষত বড় বড় সভা-সমাবেশের প্রচারের ক্ষেত্রে এটি একটি কার্যকর কৌশল হতে চলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর  মনোনীত আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী মহানগর আ’লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্ তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে আপলোড দিয়ে বিশেষ তথ্য বা প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি) কার্যক্রম শুরু করছেন। তার পেজ থেকে বিশেষ তথ্য বা প্রামাণ্যচিত্র কার্যক্রম জনসাধারণের নজর কেড়েছে।

সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্ জানায়, সর্ব প্রথম নগরবাসীদের সমস্যাসমূহ চিহ্নিতকরণের পর বিশ্লেশনের মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করে নগরবাসীদের কাছে ভিডিও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। নগরবাসীদের পুরোনো সকল অসুবিধা সমাধান   কারো পক্ষেই একার করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বরিশালবাসীর সার্থে উন্নয়নের স্বার্থে কথায় না বলে কাজে নগরবাসীদের সমাধানের জন্য সকলকে একসাথে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।

অপর দিকে জনসমর্থন ক্রমশ তলানীতে নামতে থাকা মাঠের রাজনীতিতে নির্বাসিত দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপিও হৃত অবস্থান পুনরুদ্ধারে প্রযুক্তি ব্যবহারে ধীরে ধীরে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

উন্নত বিশ্বের মতো ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারনা ক্রমশঃ দেশীয় সংস্কৃতিতে জায়গা করে মূলত তরুণ নেতারাই ডিজিটাল প্রচারে বেশ এগিয়ে।

বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, বিসিসিতে মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৪১ হাজার ৯শ’ ৫৯ জন। গত নির্বাচনে ভোটার ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ২শ’ ২৭। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৭টি। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ১শ’টি। গতবার ভোটার বেড়েছিল ৩১ হাজার ৪৬২ জন। গতবারের তুলনায় এবার ভোটার বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৩২ জন। এঁদের অধিকাংশই তরুণ। বাকিরা স্থানান্তরিত হয়ে শহরে এসেছেন।

এ বছর প্রথম ভোট দেবেন বরিশাল বিএম কলেজ শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান উর্মি । তিনি জানান, তরুণ প্রজন্মের জন্য আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়ন দরকার। আর এই কাজে যিনি এগিয়ে আসবেন, যিনি তরুণদের অগ্রাধিকার দেবেন, তাঁকেই তিনি ভোট দেবেন।