বরিশাল সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ৩০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
এসময় তাপস বলেন, বরিশালে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি নির্বাচিত হলে সিটি এলাকাকে উৎপাদনমুখী মেগা সিটিতে পরিণত করা, সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রতিষ্ঠা, আধুনিক কম্পিউটার ও কারিগরি প্রতিষ্ঠা করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশী-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, শহরকে আইসিটি নগরীতে পরিণত করা এবং নিজে দুর্নীতিমুক্ত থেকে সিটি করপোরেশনকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করাসহ ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জাপা প্রার্থীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী মহানগর জাপার আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, বরিশাল সিটি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে বরিশাল থেকেই এই সরকারের পতন আন্দোলনে যাবে জাতীয় পার্টি।
এদিকে তীব্র দাবদাহের মধ্যে প্রচারণায় ঘাম ঝড়াচ্ছেন বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান মেয়র প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
সুষ্ঠু ভোট হলে নির্বাচিত হয়ে নগরবাসীর সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার অঙ্গীকার করেছেন তারা।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত রবিবার বেলা ১২টার দিকে নগরীর ১৪ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাবাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় নতুন বরিশাল বিনির্মাণে ১২ জুন নৌকায় ভোট চান তিনি।
গণসংযোগকালে খোকন সেরনিয়াবাত সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার বাবা আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং মামা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করি।
নির্বাচিত হতে পাড়লে নিজে দুর্নীতিমুক্ত থেকে সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করবেন।
নৌকার প্রার্থী বলেন, বিগত দিনে সিটি এলাকায় তেমন উন্নয়ন হয়নি। জনগণ দায়িত্ব দিলে নগরীর প্রধান প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেবেন। বর্ধিত এলাকায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন। বরিশাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া সকালে নগরীর আদালতপাড়ায় গণসংযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। এ সময় আদর্শ নগরী গড়তে ১২ জুন হাতপাখা প্রতীকে ভোট চান তিনি।
গণসংযোগকালে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, নির্বাচিত হতে পাড়লে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে বিনোদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে পর্যটন নগরীতে পরিণত করার চেষ্টা করবেন। নগরীর বর্ধিত এলাকার উন্নয়নে সচেষ্ট থাকবেন। নগরীর বস্তিগুলোতে শিক্ষার আলো ছড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবায় প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ফ্রি মেডিকেল কেন্দ্র স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এদিকে বিএনপি’র কারণ দর্শানোর চিঠির জবাব দিতে ঢাকায় অবস্থান করছেন সাবেক মেয়রপুত্র স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। তবে তার পক্ষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বটতলা এলাকায় গণসংযোগ করেন তার কর্মী-সমর্থকরা।
এ সময় সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য টেবিল ঘড়ি প্রতীকে রুপনের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন তার নির্বাচন সমন্বয়কারী মো. রেজাউল ইসলাম।
তবে বরিশাল সিটি নির্বাচনে অন্য ৩ মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যক্রম তেমন দৃশ্যমান নয়।
উল্লেখ্য, বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। ১২ জুন ইভিএম মেশিনে নগরীর ১২৬টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন তারা।