বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে শতভাগ দূর্নীতিমুক্ত গড়ার মিশনে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago
সাদিক আব্দুল্লাহ

বিসিসি’কে শতভাগ দুর্নীতি মুক্ত করে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়ার জন্য ফের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে রদবদল করা হয়েছে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে পূর্বের কর্মকান্ডের হিসেব নিকেশের খসড়া অনুযায়ী যথার্থদের যথাস্থানে রদবদলের পাশাপাশি দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমানে বরখাস্ত করনের নির্দেশনা মোতাবেক প্রশাসনিক দপ্তর থেকে রদবদলের আর বরখাস্তকৃতদের চিঠির মাধ্যমে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অতিসম্প্রতি এক জরুরী সভায় দুর্নীতিমুক্ত বিসিসি গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এ নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপূর্বে বিসিসি’র জনবল অধিক থাকায় প্রতিমাসের বেতন প্রধানে বৃহৎ অংকের রাজস্ব ব্যয় হয়ে আসলেও কর্তব্যবরতদের কর্মঅবহেলা আর স্বেচ্ছাচারিতায় নাগরিকরা তাদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শ্রমিকদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র উদ্যোগে বায়োমেট্রিক সেন্সর সিস্টেম মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এতেকরে কর্তব্যরতদের উপস্থিতি ও প্রস্থানের সঠিক সময় নির্ধারনে ডিজিটালভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কর্মচারী এবং বিলম্ব করে নির্ধারিত অফিস সময় ফাঁকি দেওয়ার আর কোন সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ।

 

সূত্রমতে, অফিস আদেশের মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হুমায়ুন কবিরকে পানি সরবরাহ বিভাগের দায়িত্বে আর পানি সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা ওমর ফারুককে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী হিসেবে রদবদল করা হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা কাজী মনিরুল ইসলাম স্বপন, নলকূপ বসানোয় উৎকোচ গ্রহণসহ নানা দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পানি সরবরাহ বিভাগের ডায়মন্ড, সড়ক পরিদর্শক (আরআই) সাজ্জাদ হোসেন এবং তেল চুরিসহ নানাভাবে সাবেক পরিষদের সময়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী রেজা ইসলামকে অফিস আদেশের মাধ্যমে ওএসডি করা হয়েছে।

 

এছাড়া উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল লোহানীর অনিয়ম ও কর্মঅবহেলায় উন্নয়নমূলক কাজে মারাত্মক ক্ষতিসাধন হওয়া এবং অনৈতিক উপায়ে ভাউচার বিল দেয়াসহ ঠিকাদারদের সাথে আতাত করে দুর্নীতি করায় তাকে অফিস আদেশের মাধ্যমে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, এরপূর্বে বিসিসি’র চতুর্থ পরিষদের জরুরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশাসনিক কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে থাকা আসমা বেগম রুমীকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে একই শাখায় বিশেষ কাজে নিয়োজিত এবং প্রশাসন শাখার পরিসংখ্যানবিদ স্বপন কুমার দাসকে প্রশাসনিক কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি হিসাব বিভাগের বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যহতি দিয়ে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিয়োজিত এবং সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (বাজেট ও অডিট) মোঃ আক্তারুজ্জামানকে অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এছাড়া কর্পোরেশনের হাট-বাজার ও স্টল শাখার সুপারিনটেনডেন্ট নুরল ইসলাম, অবৈধ উচ্ছেদ শাখায় কর্মরত উচ্চমান সহকারী জাহাঙ্গীর হোসেন ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধাকে সাময়িক অব্যহতি দিয়ে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিয়োজিত করা হয়েছে।

 

সূত্রে আরও জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল। যারমধ্যে অতিরিক্ত ভ্যাট প্রদান ও জনবল দেখানোর বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। চলতি রমজান মাসের মধ্যে মোট ১৯জনকে রদবদল, বরখাস্ত এবং ওএসডি করার সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিভাগে ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রগুলোর দাবি, বর্তমান পরিষদের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহনের পর টেকসই উন্নয়ন আর স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত বরিশাল সিটি গড়তে প্রতিটি শাখার কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে মাসব্যাপী অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় অডিট তদন্তে মারাত্মক সব অভিযোগ অনিয়ম আর দুর্নীতির প্রমানে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকটি পদে রদবদল করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল হাসান বলেন, কাজের গতি বাড়ানোর জন্য বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব রদবদল করা হয়েছে।