বরিশাল সিটির মেয়র পদে লড়াইয়ে আলোচনায় তারুণ্য

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে থাকা একাধিক তরুণ নেতা।

যাদের মধ্যে এখনো কেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। আবার কেউ বরিশালের অপরিচিত মুখও নন।

এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষণে প্রার্থী বেশি হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র ভোটব্যাংকে আঘাতের সম্ভবনা রয়েছে। সুধী সমাজ মনে করছেন প্রার্থী বেশি হলে নির্বাচনী মাঠ জমজমাট হবে। তবে যোগ্যতাসম্পন্ন ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি প্রার্থী হয় আর তাকে যদি জামানত হারাতে হয়। তবে সেটা ওই প্রার্থীর জন্য যেমন লজ্জাজনক তেমনি ভবিষ্যত রাজনীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

আগামী সোমবার (৩০ জুলাই) নির্ধারণ করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ। তারিখ ঘোষণার পরপরই মাঠে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য সব দল।

এদিকে, ইফতার আয়োজন থেকে চায়ের দোকান সবজায়গাতেই চলছে নির্বাচনী আলোচনা। যদিও এখন প্রশ্ন কে পাচ্ছেন কোন দলের মনোনয়ন। কারণ বিএনপি-আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন উভয় দলের একাধিক প্রার্থী এরইমধ্যে মেয়র প্রার্থী হওয়ার মত প্রকাশ করেছেন।

বরিশাল মহানগরে বিএনপি এখনো প্রার্থী বাছাই না করলেও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী হিসেবে তরুণ নেতৃত্বে মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন শুধু কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা। আব্দুল্লাহ জনপ্রিয়তার দিক থেকে তরুণ ও সাধারণ মানুষের কাছে এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি দলীয় নেতাকর্মীদের।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জনের মধ্যে এবারই বেশ কিছু তরুণ ও তরুণীর নাম সামনে এসেছে। আর এরাই নিজ দলের হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে বিগত দিন বরিশালের রাজপথ দাপিয়ে বেড়িছেন।

যাদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশ

ছাত্রমৈত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সভাপতি ও বরিশাল মহানগর শাখার সভাপতি শামিল শাহরোখ তমাল।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা থেকেই মেয়র প্রার্থী হতে চাই। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। দল যদি মনোনয়ন দেয় তবে আমি প্রার্থী হিসেবে আশাবাদী। নারী বা তরুণ যেটাই বলুন না কেন যখন সাধারণ মানুষের কাছে থাকি তখন তারাই উৎসাহ দেয়।

বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বরিশাল মহানগর শাখার সভাপতি শামিল শাহরোখ তমাল বাংলানিউজকে বলেন, দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাবো এমন আশা থেকেই নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাচ্ছি। আর বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার তো তরুণদেরই জোয়ার। সাধারণ মানুষ চায় তরুণরা নির্বাচনে আসুক। বিগত পাঁচ বছরে বরিশালের কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাই সেই ভুল মানুষ আর করবে না। আর যেখানে তরুণদের জোয়ার চলছে, সেখানে আমি মনে করি সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে থাকবে এবং আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। প্রার্থীতা চূড়ান্ত হওয়ার আগে ১৪ দলের একটি বিষয় রয়েছে, যা আমরা মেনে নেবো। তবে আমি আশাকরি ১৪ দল আমার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি সমর্থন করবে।
এদিকে বহু আগে থেকেই বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের পক্ষ থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য সচিব, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সভাপতি ডা. মনীষা চক্রবর্তী মাঠপর্যায়ে তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

মনীষা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যেটা মনে করি, তরুণ বা বয়সের বিষয়টা থেকেও নিজের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে কতোটা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছি। সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। একটা গতিশীল বা একধরনের নতুন কোনো চিন্তা বা একটা পরিবর্তন আনতে হলে তরুণদের অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। আমরা সবসময় দেখেছি তারণ্যই একটা প্রগতি বা পরিবর্তনের পথ নির্দেশ করে। আর সে জায়গা থেকেই নতুন চিন্তা বা সেই পরিবর্তনের চিন্তাকেই বহন করছি আমরা। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তরুণ থেকে শুরু করে সবস্তরের মানুষের কাছ থেকে আমরা সমর্থন পাবো।

উল্লেখ্য, বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১২৭টি এবং ভোটার সংখ্যা দুইলাখ ৭১ হাজার ৯৫৯জন।