বরিশাল সিটির জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ!

:
: ৭ years ago

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) জন্ম নিবন্ধন শাখার চারটি কম্পিউটারের মধ্যে তিনটি বিকল। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জন্ম নিবন্ধনের কাজ। আটকা পড়ে আছে প্রায় দুই হাজার আবেদনপত্র। দুই সপ্তাহ আগে ফরম জমা দিয়েও এখনও জন্ম নিবন্ধনের সনদ হাতে পাননি অনেকেই। ভুক্তভোগীরা বলছেন, বরিশাল সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।রবিবার (১২ নভেম্বর) বরিশাল সিটি করপোরেশনের অ্যানেক্স ভবনের জন্ম নিবন্ধন শাখায় গিয়ে দেখা গেছে অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার ঘোষণায় এই চাপ মাত্রা ছাড়িয়েছে।

জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার প্রকল্প এ বছরের ডিসেম্বর থেকে চালু হওয়ার কথা। এই উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীদের অন্যান্য ডক্যুমেন্টসের পাশাপাশি জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি জমা দিতে বলা হয়। এরপরই নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের অভিভাবকরা সন্তানদের এই সনদ নেওয়ার জন্য ভিড় করতে শুরু করেছেন সিটি করপোরেশনের জন্ম নিবন্ধন শাখায়। কিন্তু অ্যানেক্স ভবনের তিনটি কম্পিউটার বিকল হওয়ায় এই কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

কাউনিয়া এলাকা থেকে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে এসেছিলে আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাচ্চার উপবৃত্তির জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি বিদ্যালয়ে জমা দিতে হবে। প্রায় দুই সপ্তাহ হলো আবেদন জমা দিয়েছি। এখনও ওই সনদ হাতে পাইনি।’

আবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আগে এই নিবন্ধন সনদের জন্য প্রতিবছর ১০ টাকা হারে টাকা জমা নিত। এখন ৫ বছর পেরিয়ে গেলেই আবেদনের জন্য ২৩০ টাকা করে জমা নিচ্ছে। অথচ সময়মতো নিবন্ধনের সনদ হাতে পাচ্ছি না। স্টাফরা জানিয়েছে, চারটি কম্পিউটারের তিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। তাই দেরি হবে।’
জন্ম নিবন্ধনের আবেদনপত্র জমা নেওয়ার দায়িত্বে থাকা স্টাফ ইরানী বেগম বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার সময় ঘনিয়ে আসায় হঠাৎ করেই জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য চাপ পড়েছে। দিনে চার থেকে পাঁচশ আবেদনপত্র জমা পড়ছে। প্রায় ১৭ থেকে ১৮শ আবেদনপত্র ঝুলে আছে। কিন্তু অফিসের চারটি কম্পিউটারের তিনটি বিকল হয়ে থাকায় আমরা শিডিউল অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধনের সনদ দিতে পারছি না। কম্পিউটার সারানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিসিসি অ্যানেক্স ভবনের জন্ম নিবন্ধন শাখার দায়িত্বশীল ও পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে ও তিনি কলটি রিসিভ করেনি।
সিটি করপোরেশনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ শাখার দায়িত্বে থাকা বিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন শাখার কম্পিউটারের দায়িত্ব ওই শাখার কর্মকর্তার। তিনি অভিযোগ না করলে আমাদের কিছু করার নেই। নতুন কম্পিউটারের প্রয়োজন হলে তার জন্য অনুমতি লাগবে এবং অনেক টাকাও প্রয়োজন। এটা তো সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তবে আমরা ওই শাখার দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’