বরিশাল সিটিতে সুশিক্ষিত প্রার্থী খুঁজছে আ’লীগ?

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরগরম হয়ে উঠছে নির্বাচনী মাঠ। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাপে সেই পরিবেশ আরও উত্তাপ ছড়াচ্ছে। নৌকা প্রতীক চেয়ে মাঠে থেকে হাইকমান্ডে লবিং তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু এই দলটি থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন বা হবেন সেই বিষয়টি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারাও বলছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে কে প্রার্থী হবেন সেই বিষয়টি পুরোপুরি চূড়ান্ত হয়নি। কিন্তু আভাস দিয়েছে বরিশালসহ তিনটি সিটিতেই দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি রয়েছে। তিনি চাইছেন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী। যিনি সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরনের ন্যায় বরিশালবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবেন।

সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী ওই প্রার্থীর শিক্ষার বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। যে কারণে দুটি সিটিতে প্রার্থী অনেকাংশে নিশ্চিত হলে বরিশালে চূড়ান্ত নয়। কেন্দ্রীয় একটি সূত্র জানিয়েছে- নৌকার প্রার্থী হতে আগ্রহী অন্তত হাফডজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে রয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা খান মামুন।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- কেন্দ্রে প্রার্থী চূড়ান্তের ক্ষেত্রে বিচার বিশ্লেষণ চললেও বরিশালে সম্ভব্য প্রার্থীদের মাঠচষা থেমে নেই। বিশেষ করে বর্তমানে প্রচার প্রচারণায় চালিয়ে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। যদিও এই নেতার পক্ষে নৌকা প্রতীক চেয়ে হাইকমান্ডে অনেক আগেই সুপারিশ পাঠিয়েছে এখানকার নেতাকর্মীরা। এদিকে একইভাবে মাঠে থেকে আলোচনা রয়েছেন জাহিদ ফারুক শামীম ও খান মামুনসহ আরও অনেকে। খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে- সম্ভব্য প্রার্থীদের মধ্যে শিক্ষা ও ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে কেন্দ্রে খান মামুন আলোচনায় রয়েছেন। এমনকি এই নেতার অতীত ইতিহাস সম্পর্কেও ইতিমধ্যে হাইকমান্ড খোঁজখবর নিয়েছে। সেই সাথে সাদিকসহ আরও সম্ভব্য প্রার্থীদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড জেনেছেন। সেই অতীত ইতিহাস থেকেও প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে খান মানুমেন বিগত সময়ে ভুমিকা শুনেছেন।

বিশেষ করে তৎকালীন বিএনপি ও সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে মাঠে শক্তপোক্ত অবস্থানে বিষয়টি শুনে প্রশংসাও করেছেন। তাছাড়া স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে এই নেতা ছিলেন অগ্রভাগে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে- আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে খান মামুনকে নৌকা প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। অবশ্য আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবাহান গোলাপ বলছেন- ধারণা অমুলক নয়। নেত্রী চাইছেন একজন সুশিক্ষিত ও ত্যাগী প্রার্থী। কেন্দ্রে যাদের বায়োডাটা এসেছে সেগুলো যাচাই বাচাই করে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নেত্রী জনপ্রিয়তার বিষয়টিও গুরুত্ব দেবেন। বলা চলে স্থানীয় নেতাকর্মী ও ভোটাররা কী চাইছেন। এমতাবস্থায় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, এখনও তাদের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে মহানগরের যুগ্ম-সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সুপারিশ পাঠিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে দলের সভানেত্রী এবং কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানান তিনি। যিনিই দলীয় মনোনয়ন পাবেন তাকে বিজয়ী করতে দল সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবে বলে মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতা জানান। এক্ষেত্রে হাইকমান্ডের ভাষ্য হচ্ছে- স্থানীয়ভাবে সুপারিশটা বড় করে আপাতত দেখছেন না প্রধানমন্ত্রী। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) খুঁজছেন যিনি বিগত সময়ে অর্থাৎ আ’লীগের দুর্দিনে মাঠে ছিলেন এবং আন্দোলন সংগ্রামে ভুমিকা রেখেছেন। কিন্তু এখন কে আ’লীগের প্রার্থী হচ্ছেন সেই বিষয়টি দেখতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

যদ্দুর জানা গেছে- আগামী ১৩ জুন বরিশালসহ ৩ সিটিতে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিতরণ হবে ১৭ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত। পরদিন ২২ জুন পর্যন্ত প্রার্থীতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবে কেন্দ্র। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।