বরিশাল সদর উপজেলার সবজায়গাতে সার্বিকভাবে উন্নয়নের ছোয়াটা লাগবে-পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক

:
: ২ years ago

পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল অব. জাহিদ ফারুক-এমপি বলেছেন, আমি ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছিলাম এবং মাত্র ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে আমি হেরে গিয়েছিলাম। এরপর ১০ বছর চলে গেছে কিন্তু আশ্চর্য লাগে যখন বরিশালের দিকে তাকিয়ে দেখি। বরিশালে আগে যারা সংসদ সদস্য ছিলো বিশেষ করে বিরোধী দলে যিনি ছিলেন তিনি পাঁচ বার সংসদ সদস্য ছিলেন, মানে ২৫ বছর সংসদ সদস্য ছিলেন।তারপর যারা ছিলো তারাসহ সবাই মিলে এলাকার উন্নয়নে কেউ খেয়াল রাখেনি বলে আমার মনে হয়।তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে চেস্টা করেছে এবং তার নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে চেস্টা করেছে।আমি যখন দায়িত্ব নেই তখন দেখলাম- বরিশাল সদর আসনে রাস্তাঘাট নাই, লাইট নাই, ঠিকমতো কাজ হচ্ছে না, টিউবয়েল নাই।তখন আমার শুধু আশ্চর্য লেগেছে, কারন এর আগে যারা জনপ্রতিনিধি ছিলো তাদেরকে আপনারা কিভাবে এতবার ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য কিভাবে বানালেন। যারা ২৫ বছর ধরে সংসদ সদস্য ছিলেন তারা এলাকার জন্য কি করেছেন এই প্রশ্ন আজও রাখছি।

বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বিল্লুবাড়ি বেকারির পোল সংলগ্ন বালুর মাঠে অনুষ্ঠিত এলজিডি এর আওতায় বরিশাল সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন,বরিশাল সদর উপজেলার সব ইউনিয়নে কি উন্নয়ন হয়েছে তা অনুধাবন করতে পারবেন বছর খানেক পরে।কারন চলমান ও নতুন প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে উন্নয়ন বোঝা যাবে।আমি ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের অনুরোধের জন্য অপেক্ষা করবো না, আমি একজনকে দায়িত্ব দিয়েছি জোনের মাধ্যমে সদর উপজেলার সব রাস্তাঘাটের কি অবস্থা, কোন ইউনিয়নে কতগুলো স্কুল-মসজিদ আছে এগুলোর ছবি উঠাবে। আমি ১৫ দিন সময় দিয়েছে, তারমধ্যে সেগুলো নিয়ে আসলে তা দেখে বরিশালের উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প নিবো।যেটা পাশ করিয়ে আগামী বছর থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।

এসময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন,এটা হলে বরিশাল সদর উপজেলার সবজায়গাতে সার্বিকভাবে উন্নয়নের ছোয়াটা লাগবে।এখন ইউনিয়ন থেকে যে যা চাচ্ছে সেটা আমি করে দিচ্ছি। এই তিন বছরে আমি যতো টিআর-কাবিখার কাজ করেছি তা ঠিকাভাবেই করেছি। কেউ বলতে পারবে না টিআর কাবিখার থেকে আমি একটা টাকাও নিয়েছি। আমি টিউবয়েল দিয়েছে আরো টিউবয়েল দিবো। এটা হলে সামগ্রিকভাবে আপনাদের যে বিশুদ্ধ পানির সংকট সেটা থেকে আপনারা মুক্ত হবেন।

তিনি বলেন,বরিশাল শহরে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা হয়। অল্পতেই হাটু সমান পানি চলে আসে।এটা কিন্তু দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিলো। বিএনপির শাসনামলে তারা খালগুলো বন্ধ করে রাস্তা বানিয়েছে। বরিশাল নদী মাতৃক এলাকা। এখানে বৃষ্টির পানিগুলো খালের মাধ্যমেই নদীতে গিয়ে পরতো।কিন্তু সেগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। আমি বরিশালের সাতটি খাল নিয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছি।আগামী একমাসের মধ্যে প্রকল্পটা পাশ হয়ে গেলে পরে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন মিলে কাজ শুরু করবে। এটা হলে পরে আগামীতে রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা হবে না।

তিনি বলেন, আজ আমি আপনাদের কাছে এসেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপ্ন ছিলো সোনার বাংলা গড়ার।যে সপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেননি কিন্তু একটি শক্ত ভিত রচনা করে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে পৌছে গিয়েছি। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পৌছাবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে পৃথিবীর অন্যান্য বড় বড় দেশের মতো সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে আমরা পৌছাতে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রনায়কদের কাছে একজন সন্মানিত ব্যক্তি হিসেবে সীকৃতি লাভ করেছে। সবাই মনে করেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন রাষ্ট্র নায়ক এবং তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।শেখার আছে এজন্য- আমাদের বাংলাদেশ ছোট একটা দেশ কিন্তু জনসংখ্যা অনেক বেশি, তারপরও সবাইকে যে ভালো রাখতে পেরেছেন তিনি।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কারনে আমরা অর্থনৈতিকভাবে একটা সন্মানিত জায়গাতে পৌছাতে সক্ষম হয়েছি।ইংল্যান্ডের একটা সমীক্ষায় বলা হয়েছে বাংলাদেশ আগামী ৩০ সালের ভেতরে পৃথিবীর সবগুলো দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক চাঙ্গা ২৫ তম দেশ হিসেবে থাকবে। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিকভাবে কোথায় পৌছেছি সেটা বুঝতে পারেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাত-দিন কাজ করেন দুটি কারনে। একটা হলো তিনি বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চান।দ্বিতীয় হলো প্রধানমন্ত্রীর পিতা বঙ্গবন্ধু সবসময় চেয়েছিলেন বাঙ্গালি জাতি মাথা উচু করে অর্থনৈতিকভাবে ভালো থাকে, সবাই সুখে শান্তিতে থাকেন আর সেটাই তিনি করছেন।প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোআ করবেন, তিনি যাতে সুস্থ ও ভালো থাকেন। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে, তিনি না থাকলে উন্নয়ন মুখ থুবরে পরবে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন আমাদের ৩ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ছিলো আজকে সেখানে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুই পাই। এখন কিন্তু কথায় কথায় বিদ্যুৎ যায়না।আমার উপজেলার কোথাও নেই যেখানে বিদ্যুৎ পৌছায়নি। এগুলো সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একক নেতৃত্বে এবং তার চিন্তা-চেতনার কারনে। তিনি আমাকে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়ার পর বলেছিলেন আমি চাই নদী ভাঙ্গনে দুঃখ কষ্টে থাকা মানুষের মুখ হাসি ফুটুক। এজন্য আমি দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাই এবং নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করে যাচ্ছি।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-এলজিইডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মোঃজামাল উদ্দিন, বিসিসিবি’র পরিচালক আলমগীর খান আলো, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মধূ, বরিশাল মহানগর যুবলীগের আহবায়ক মোঃ নিজামুল ইসলাম নিজাম,যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বার এবং আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য আজ সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার ওপরে ১১ টি কাজের (স্কীমের) উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী।